Tuesday, February 2, 2016

প্রবাসী ভাই দের উদ্দেশে:

প্রবাসী ভাই দের উদ্দেশে: 
জীবন-জীবিকা এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতির প্রবাস জীবনে পাড়ি জমায়,
কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়ে জীবন জিবিকা-যুদ্ধ,করে অর্থ-উপার্জন করে,
তার পর জীবনের অগ্রগতি কঠিন-বাদা হয়ে দাড়ায়,দেশে রেখে যাওয়া স্ত্রী
কিছু স্বামী যখন দেশে আসতে চায় 
স্ত্রী বলে কিসের জন্য-স্বামীত বুঝতে পারে নাই
তাই মাসে মাসে টাকা পাটায়,স্বামীত জানে না স্ত্রী অবৈধ
সম্পর্ক লিপ্ত স্বামীকে প্রয়োজন মনে করে না,
বউ-মেয়ে পরকিয়া প্রেমে...হাবু-ডুবু খাচছে অবৈধ পুরুষ ও নারীর
তাই স্বামী কে প্রয়োজন মনে করে না,অবৈধ প্রেমিকের যৌন ব্যভিচার/সঙ্গে
যৌন মিলনে জিনায় লিপ্ত হয়ে আছে-লজ্জা হীনা নারী
-{আল্লাহ যদি আপনার বিবেক দিয়ে থাকে ,মন্তব্য করার আগে Status দেখে নিবে। বিবেক বানদের জন্য,নারী সুন্দর এবং মধু সুরে কথার শুনে বিবেক যেন ও হারিয়ে না যায়। ............আল্লাহ-পরকাল যদি বিশ্বাস করেন ।
অন্যায় না কমার একটি মূল কারণ হল অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার কারনে।

প্রতিবেশীর হক সচেতনতা প্রয়োজন

নামাজ রোজা তাহাজ্জুদ পড়ে কোন কাজে আসবে না, যদি না মানও।
রাসুল (সাঃ) বলেন :
1.তোমরা যদি কোন অপরাধ হতে দেখ তবে হাত দিয়ে বাধা দাও
2.হাত দিয়ে সম্ভব না হলে মুখ দিয়ে বাধা দাও,
3.তাও সম্ভব না হলে অন্তর দ্বারা সেটাকে ঘৃণা কর। 
মহান আল্লাহ বলেন আমি তোমাদের ন্যায়,অন্যায় বোঝার ক্ষমতা দিয়েছি।

প্রতিবেশীর হক : সচেতনতা প্রয়োজন

প্রতিবেশী। মানবসমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ফলে ইসলামে প্রতিবেশীর হককে অনেক গুরুত্ব দেয়াহয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনজিবরীল (.) আমাকে প্রতিবেশীর হকেরব্যাপারে এত বেশি তাকিদ করেছেন যেআমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিবেশীকে মিরাছের অংশিদার বানিয়েদেয়া হবে। (দ্র.সহীহ বুখারী ৬০১৪;সহীহ মুসলিম ২৫২৪কিন্তু আজকাল  বিষয়ে আমাদের মাঝে চরমঅবহেলা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে শহরের মানুষের মাঝে। বছরের পর বছর পার হয় পাশের বাড়িরকারো সাথে কোনো কথা হয় নাখোঁজ খবর নেওয়া হয় নাবরং বিভিন্নভাবে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া হয়।অথচ প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ  তাকে কষ্ট না দেওয়াকে ঈমানের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনযে আল্লাহ  আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীরসাথে সদাচরণ করে। (সহীহ মুসলিমহাদীস : ১৮৫আরেক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেনযে আল্লাহ  আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। (সহীহ মুসলিম,হাদীস : ১৮৩)
প্রতিবেশী কে?
প্রতিবেশী বলতে মুসলিমকাফেরনেক বান্দা,ফাসেকবন্ধুশত্রু,পরদেশীস্বদেশীউপকারী,ক্ষতিসাধনকারীআত্মীয়অনাত্মীয়নিকটতম বা তুলনামূলক একটু দূরের প্রতিবেশী সবাই অন্তর্ভুক্ত।
আর প্রতিবেশী সাধারণত তিন শ্রেণীর হয়ে থাকে এবং তাদের হকও বিভিন্ন দিকে লক্ষ করে কম বেশী হয়েথাকে। যার এক দিক থেকে হক থাকে। সে হলঅনাত্মীয় বিধর্মী প্রতিবেশী।  ব্যক্তির হক শুধু প্রতিবেশীহওয়ার ভিত্তিতে।  যার দুই দিক থেকে হক থাকে। সে হলমুসলিম প্রতিবেশীযার সাথে আত্মীয়তারকোনো সম্পর্ক নেই।  ব্যক্তির হক প্রতিবেশী এবং মুসলিম হওয়ার দিক থেকে। যার তিন দিক থেকে হকথাকে। সে হলমুসলিম আত্মীয় প্রতিবেশী।  ব্যক্তির হক প্রতিবেশীমুসলিম  আত্মীয় হওয়ার দিক থেকে।তবে প্রত্যেক শ্রেণীই যেহেতু প্রতিবেশী তাই প্রতিবেশীর সকল হকের ক্ষেত্রে সবাই সমান হকদার। আরপ্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখাবিপদে আপদে এগিয়ে যাওয়াএকে অপরের সুখ-দুঃখের শরিক হওয়াহাদিয়াআদান প্রদান করাসেবা শুশ্রূষা করাপ্রতিবেশীর কেউ মারা গেলে সান্ত্বনা দেওয়াকাফন দাফনে শরিকহওয়াএকে অপরের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেওয়াপ্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়াপ্রতিবেশীরকষ্টের কারণ হয় এমন সব ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি সবই একজন মুমিনের স্বভাবজাতবিষয় হওয়া উচিত।
প্রতিবেশীর হক কুরআনে
আল্লাহ তাআলা আলকুরআনুল কারীমে সূরা নিসার ৩৬ নং আয়াতে আল্লাহর ইবাদাত  তার সাথে কাউকেশরিক না করা-এই বিধানের সাথে উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের হক। তার মধ্যে রয়েছে মাতাপিতার হকআত্মীয় স্বজনের হকএতীমের হক ইত্যাদি। এসব গুরুত্বপূর্ণ হকের সাথেই আল্লাহ প্রতিবেশীরহককে উল্লেখ করেছেন।  থেকেই বোঝা যায়প্রতিবেশীর হককে আল্লাহ কত গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তা রক্ষাকরা আমাদের জন্য কত জরুরি। আল্লাহ বলেছেন, (অর্থতোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং কোনো কিছুকেতার সাথে শরিক করো না। এবং পিতা-মাতাআত্মীয়-স্বজনএতীমঅভাবগ্রস্থনিকট-প্রতিবেশীদূর-প্রতিবেশীসংগী-সাথীমুসাফির  তোমাদের দাস-দাসীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর। নিশ্চয় আল্লাহদাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। 
উত্তম প্রতিবেশী কে?
 প্রশ্নের সহজ উত্তর হলযে প্রতিবেশীর সাথে ভালো আচরণ করে এবং প্রতিবেশীর সকল হক যথাযথভাবেআদায় করে। ফলে প্রতিবেশী তার উপর সন্তুষ্ট থাকে এবং আল্লাহ্ও তার উপর সন্তুষ্ট থাকেন। হযরতআব্দুল্লাহ ইবনে আম্র রাবলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ... যে স্বীয় প্রতিবেশীরদৃষ্টিতে ভালো সেই সর্বোত্তম প্রতিবেশী। (সহীহ ইবনে খুযাইমা হা২৫৩৯শুআবুল ঈমান বায়হাকীহা.৯৫৪১মুসনাদে আহমদ হা৬৫৬৬)
প্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখা ঈমানের দাবি
হযরত ইবনে আববাস রাথেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ব্যক্তি মুমিননয় যে পেটপুরে খায় অথচ তার পাশের প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে। (মুসনাদে আবু ইয়ালাহাদীস ২৬৯৯;আল আদাবুল মুফরাদহাদীস ১১২)
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়অনেক প্রতিবেশীই এমন আছেযাদের দেখে বোঝার উপায় নেই যেতারাঅভাবে দিন কাটাচ্ছে। আবার  আমার কাছে কখনো চাইবেও না।  কুরআন মাজীদে এদেরকে ‘মাহরূম’ বলাহয়েছেসূরা যারিয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,(অর্থএবং তাদের সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত  মাহরূমের(বঞ্চিতেরহক। (সূরা যারিয়াত : ১৯এক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্যনিজে থেকে তাদের খোঁজ খবর রাখা এবংদেওয়ার ক্ষেত্রে এমন পন্থা অবলম্বন করাযাতে সে লজ্জা না পায়। এজন্যইতো যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে এটাবলে দেয়া জরুরি নয় যেআমি তোমাকে যাকাত দিচ্ছিবরং ব্যক্তি যাকাতের যোগ্য কি না এটুকু জেনেনেয়াই যথেষ্ট। 
আর আমি প্রতিবেশীর প্রয়োজন পুরা করব তাহলে আল্লাহ আমার প্রয়োজন মিটিয়ে দিবেন এবং আমার সহায়হবেন। হাদীস শরীফে এসেছেযে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পুরা করে আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরা করেন। (সহীহবুখারী,হাদীস ২৪৪২সহীহ মুসলিমহাদীস ২৫৮০) &

প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ
প্রতিবেশী আমার জীবনের আবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। তার সাথে আমার আচরণ সুন্দর হবে তা কি বলে বোঝাতেহয়আর আমি যদি মুমিন হই তাহলে তো তা আমার ঈমানের দাবি। হযরত আবু শুরাইহ্ রাবলেনআমারদুই কান শ্রবণ করেছে এবং আমার দুই চক্ষু প্রত্যক্ষ করেছে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেনযে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং আখেরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকে সম্মান করে।সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় আছে ‘সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করে।
(সহীহ বুখারীহাদীস ৬০১৮সহীহ মুসলিমহাদীস ৪৮)
হাদিয়া আদান-প্রদান
প্রতিবেশীদের পরস্পরের সুসম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হাদিয়ার আদান-প্রদান খুবই কার্যকর পন্থা। এর মাধ্যমেহৃদ্যতা সৃষ্টি হয়  ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরাহাদিয়া আদান-প্রদান কর। এর মাধ্যমে তোমাদের মাঝে হৃদ্যতা সৃষ্টি হবে।’ (দ্রআল আদাবুলমুফরাদ,বুখারী হাদীস : ৫৯৪)
তরকারির ঝোল বাড়িয়ে দাও
প্রতিবেশীকে শরীক কর
এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীকে হাদিয়া দেওয়ার বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যেসামান্য জিনিস হাদিয়াদিতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। এক  হাদীসে আছেআল্লাহররাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু যর রা.- কে বলেনহে আবু যরতুমি ঝোল (তরকারি)রান্না করলে তার ঝোল বাড়িয়ে দিও এবং তোমার প্রতিবেশীকে তাতে শরিক করো। (সহীহ মুসলিম,হাদীস২৬২৫)
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদেরকে  বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেনহে মুসলিমনারীগণতোমাদের কেউ যেন প্রতিবেশীকে হাদিয়া দিতে সংকোচবোধ না করে। যদিও তা বকরীর খুরেরমত একটি নগন্য বস্ত্তও হয়। (দ্রসহীহ বুখারী ৬০১৭)
সুতরাং প্রতিবেশী নারীরাও নিজেদের মাঝে হাদিয়া আদান-প্রদান করবেন।
ভালো কিছু রান্না হলে...
আমার বাসায় ভালো কিছু রান্না হলে প্রতিবেশীকে না জানালেও রান্নার ঘ্রাণ তো তাকে জানিয়ে দেয়পাশেরবাড়িতে ভালো কিছু রান্না হচ্ছে। বড়দের কথা বাদ দিলামঘ্রাণ পেয়ে ছোটদের মনে তো আগ্রহ জাগবে তাখাওয়ার। সুতরাং তাদের দিকে লক্ষ্য রেখে ঝোল বাড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে হোক বা নিজে একটু কম খাওয়ারমাধ্যমে হোক সামান্য কিছু যদি পাঠিয়ে দিই তাহলে  ছোট্ট শিশুর মনের ইচ্ছা যেমন পুরা করা হবে তেমনিআল্লাহও খুশি হবেন। যা আমার রিযিকে বরকতের কারণ হবে ইনশাআল্লাহ। যে খাদেম খানা  তৈরি করলতাকেও খানায় শরিক করার কথা হাদীসে এসেছে। কারণ  খাবার প্রস্ত্তত করতে গিয়ে সে এর ধোঁয়া যেমনসহ্য করেছে তেমনি এর সুঘ্রাণও তার নাকে  মনে লেগেছে। সুতরাং... রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনতোমাদের খাদেম যখন তোমাদের জন্য খানা প্রস্ত্তত করে নিয়ে আসে তখন তাকে যদিসাথে বসিয়ে খাওয়াতে না- পার তাকে দু এক লোকমা হলেও দাও। (সামান্য কিছু দিয়ে হলেও তাকে এইখানায় শরিক করকারণসে- তো এই খানা প্রস্ত্তত করার কষ্ট  আগুনের তাপ সহ্য করেছে। (সহীহবুখারীহাদীস ৫৪৬০)
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়,ভালো কিছু রান্না হলে মাঝে মধ্যে কাজের বুয়ার সন্তানদের জন্য কিছু দেয়াউচিত। অনেক সময় খাবার বেঁচে যায়। হতে পারে আমার ঘরের  বেঁচে যাওয়া খাবারই কাজের বুয়ারসন্তানদের জন্য হবে ‘ঈদের খাবার আর আশা করা যায় এর বিনিময়ে আল্লাহ আমার জন্য জান্নাতেরমেহমানদারির ফয়সালা করবেন।
প্রতিবেশী যদি দরিদ্র হয়
আর প্রতিবেশী যদি দরিদ্র হয় তাহলে  বিষয়ে তার হক আরো বেশি। কারণ দরিদ্রকে খানা খাওয়ানো যেমনঅনেক সওয়াবের কাজ তেমনি দরিদ্রকে খানা না-খাওয়ানো জাহান্নামে যাওয়ার একটি বড় কারণ। কুরআনমজীদে ‘ছাকার’ নামক জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হিসেবে নামায না পড়ার বিষয়টির সাথে সাথে দরিদ্রকেখানা না খাওয়ানোও গুরুত্বসহকারে উল্লেখিত হয়েছে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, (জাহান্নামীকে জিজ্ঞেসকরা হবে) (অর্থকোন বিষয়টি তোমাদেরকে ‘ছাকার’ নামক জাহান্নামে ঠেলে দিয়েছে? (তারা উত্তরে বলবে)আমরা নামায পড়তাম না এবং দরিদ্রকে খানা খাওয়াতাম না। (সূরা মুদ্দাছ্ছির ৪২-৪৪)
নিকটতম প্রতিবেশীকে আগে হাদিয়া দিবযদিও সে বিধর্মী হয়
প্রতিবেশীর মধ্যে যেমন আছে নিকট প্রতিবেশীনিকটতম প্রতিবেশী  তুলনামূলক একটু দূরের প্রতিবেশীতেমনি আছে মুসলিম  বিধর্মী। এখন কাকে হাদিয়া দিব বা কাকে আগে দিবহযরত আয়েশা রাবলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম-আমার দুই প্রতিবেশী। এদের কাকেহাদিয়া দিবরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনযে তোমার বেশি নিকটবর্তী। (সহীহ বুখারী,
হাদীস ৬০২০)
মুজাহিদ রহবলেনএকবার আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আম্র রা.-এর কাছে ছিলাম। তার গোলাম একটিবকরীর চামড়া ছাড়াচ্ছিল। তখন তিনি বললেনতোমার  কাজ শেষ হলে সর্বপ্রথম আমাদের ইহুদীপ্রতিবেশীকে দিবে। তখন এক ব্যক্তি বললআল্লাহ আপনার এসলাহ করুন। আপনি ইহুদীকে আগে দিতেবলছেনতখন তিনি বললেন, (হাঁআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রতিবেশীর হকেরবিষয়টি এত বেশি গুরুত্ব দিয়ে বলতে শুনেছি যেআমাদের আশংকা হয়েছে বা মনে হয়েছেপ্রতিবেশীকেমিরাছের হকদার বানিয়ে দেয়া হবে। (আল আদাবুল মুফরাদবুখারী,হাদীস ১২৮শরহু মুশকিলিল আছার,তহাবী,হাদীস ২৭৯২)
প্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিব
অনেক সময় এমন হয়প্রতিবেশীর প্রয়োজনে কিছু ছাড় দিতে হয়। কিংবা নিজের কিছু ক্ষতি স্বীকার করলেপ্রতিবেশীর অনেক বড় উপকার হয় বা সে অনেক বড় সমস্যা থেকে বেঁচে যায়। তেমনি একটি বিষয় হাদীসশরীফে উদ্ধৃত হয়েছেযা মুমিনকে  বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,কোনো প্রতিবেশী যেন অপর প্রতিবেশীকে তার দেয়ালে কাঠ স্থাপন করতে বাধা না দেয়। (সহীহবুখারী,হাদীস ২৪৬৩সহীহ মুসলিম,হাদীস ১৬০৯)
আরেক হাদীসে এসেছেযে তার (মুসলিমভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে স্বয়ং আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরাকরেন। (সহীহ মুসলিম,হাদীস ২৫৮০)
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আদান প্রদান
আমাদের প্রায় সকলেরই সূরা মাউন মুখস্থ আছে। ‘মাউন’ অর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। দৈনন্দিন জীবনেআমাদের ছোট খাট অনেক জিনিসেরই প্রয়োজন হয়। কোনো বস্ত্ত হয়তো সামান্যকিন্তু তার প্রয়োজননিত্য। যেমন লবন। খুবই সামান্য জিনিসকিন্তু তা ছাড়া আমাদের চলে না। কখনও এমনও হয় দশ টাকারলবন কেনার জন্য বিশ টাকা রিক্সা ভাড়া খরচ করতে হবে বা এখন এমন সময় যে তা পাওয়া যাবে না।অথচ লবন না হলে চলবেই না। তখন আমরা পাশের বাড়ি বা প্রতিবেশীর দ্বারস্থ হই। এমন সময়  সাধারণবস্ত্তটি যদি কেউ না দেয় তাহলে নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। কোনো প্রতিবেশী যদি এমন হয় তাহলেতাকে ধিক শত ধিক। আল্লাহও তাকে ভৎর্সনা দিয়েছেন। সূরা মাউনে আল্লাহ বলেছেন, (অর্থসুতরাং দুর্ভোগসেই সালাত আদায়কারীদেরযারা তাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীনযারা লোক দেখানোর জন্য তা করে,এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোট-খাট সাহায্যদানে বিরত থাকে। (সূরা মাউন-)
হক্কে শুফ্আ
এটি প্রতিবেশীর গুরুত্বপূর্ণ একটি হক। নিজের জমি বা বাড়ি যদি কেউ বিক্রি করতে চায় তাহলে সে ব্যাপারেপার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ তাকে আগে জানাতে হবে যেআমি আমার বাড়ি বা জমিবিক্রি করতে চাই তুমি তা কিনবে কি না। যদি সে কিনতে না চায় তাহলে অন্যের কাছে বিক্রি করা যাবে।তাকে না জানিয়ে কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না। করলে সে দাবি করতে পারবে যেআমি এই জমি ক্রয়করব। এটা তার হক। কারণহতে পারে  জমিটি তার প্রয়োজন বা এমন ব্যক্তি তা ক্রয় করল যার কারণেসে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে ইত্যাদি। আর একেই শরীয়তের পরিভাষায় ‘হক্কে শুফ্আ’ বলে।
হাদীস শরীফে প্রতিবেশীর  হকটিকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেনযদি কেউ তার জমি বিক্রি করতে চায় তাহলে সে যেন তার প্রতিবেশীকে জানায়। (সুনানে ইবনেমাজাহহাদীস ২৪৯৩)
আরেক হাদীসে হযরত ইবনে আববাস রাথেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘শুফ্আ’- বিষয়ে প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে বেশি। প্রতিবেশি উপস্থিত না থাকলেও তার অপেক্ষা করতেহবে। এটা তখন যখন তাদের উভয়ের চলাচলের পথ এক হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহহা২৪৯৪জামেতিরমিযীহা১৩৬৯ ধরনের আরো অনেক হাদীসে হক্কে শুফ্আর বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।
মন্দ প্রতিবেশী থেকে আল্লাহ্র পানাহ
মন্দ প্রতিবেশী থেকে আমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। কারণ একজন মন্দ প্রতিবেশী সাধারণ জীবনযাত্রাকেব্যাহত করবে বা আমাকেও মন্দের দিকে নিয়ে যাবে।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা মন্দ প্রতিবেশী থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাও।(দ্রসুনানে নাসায়ী,হাদীস ৫৫০২শুআবুল ঈমান,বায়হাকী হা৯১০৬)
আমি হব না মন্দ প্রতিবেশী
আমি কারো জন্য মন্দ প্রতিবেশী হব না। যেমনিভাবে আমি চাই না যেআমার প্রতিবেশীটি মন্দ হোকতেমনিভাবে আমাকেও ভাবতে হবেআমিও যেন আমার প্রতিবেশীর কষ্টের কারণ না হই। হযরত নাফেইবনে  আব্দুল হারিস রাথেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনউত্তম প্রতিবেশীব্যক্তির সৌভাগ্যের কারণ... (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ১৫৩৭২আল আদাবুল মুফরাদবুখারী,হাদীস১১৬)
আখেরাতের প্রথম বাদী-বিবাদী
প্রতিবেশীর হক নষ্ট করা বা তাকে কষ্ট দেওয়া অনেক বড় অন্যায়। কখনো দুনিয়াতেই এর সাজা পেতে হয়আর আখেরাতের পাকড়াও তো আছেই। আমার অর্থবল বা জনবল আছে বলে আমি প্রতিবেশীর হক নষ্টকরে পার পেয়ে যাব এমনটি নয়। হাঁদুনিয়ার আদালত থেকে হয়ত পার পেয়ে যাবকিন্তু আখেরাতেরআদালত থেকে আমাকে কে বাঁচাবেহযরত উকবা ইবনে আমের রাথেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনকিয়ামতের দিন প্রথম বাদী-বিবাদী হবে দুই প্রতিবেশী। (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ১৭৩৭২আলমুজামুল কাবীরতবারানীহাদীস ৮৩৬প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব না
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার বিষয়টিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমানের দুর্বলতা বলে চিহ্নিতকরেছেন। কোনো ব্যক্তি মুমিন আবার প্রতিবেশীকে কষ্টও দেয় তা ভাবা যায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনআল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!! আল্লাহর শপথ সেমুমিন নয়!!! সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন,  সে কে হে আল্লাহর রাসূলরাসূ্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনযে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। (সহীহ বুখারী,
হাদীস ৬০১৬)
আরেক হাদীসে এসেছেযে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে  আখেরাতে বিশ্বাস করে সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকেকষ্ট না দেয়। (দ্রসহীহ বুখারী হা৬০১৮
কষ্ট দেওয়ার বিভিন্ন রূপ হতে পারে। যেমনজানালা দিয়ে উঁকি দেয়াচলা ফেরার ক্ষেত্রে দৃষ্টি অবনত নারাখাপ্রতিবেশীর বাসার সামনে ময়লা ফেলাজোরে ক্যাসেট বাজানোবিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় প্রতিবেশীরঘুম বা বিশ্রামের ক্ষতি করাপ্রতিবেশীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াগৃহপালিত পশুর মাধ্যমে কষ্টদেওয়া ইত্যাদি। নিজের গৃহপালিত পশু ছেড়ে দিলাম আর তা প্রতিবেশীর ফসলের ক্ষতি করল কিংবাপ্রতিবেশীর অবলা পশু এসে কিছু নষ্ট করেছে বলে আমি পশুটির কোনো  ক্ষতি করলাম বা পশুর মালিককেগালি দিলাম। এসকল ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া  ধৈর্য্য ধারণ করা উচিত। আল্লাহ এর প্রতিদান দিবেন।
প্রতিবেশী কষ্ট দিলে কী করব?
হতে পারে আমার প্রতিবেশী আমাকে কষ্ট দেয় তাই বলে কি আমিও প্রতিবেশীকে কষ্ট দিবতা হতে পারে না।মুমিন তো সর্বদা ভালো আচরণ করে। মুমিনের গুণ তো
أحسن إلى من أساء إليك
তোমার সাথে যে মন্দ আচরণ করে তুমি তার সাথে ভালো আচরণ কর।’ সে তো কুরআনের  আয়াতশুনেছে
ولمن صبر وغفر إن ذلك لمن عزم الأمور.
প্রকৃতপক্ষে যে সবর অবলম্বন করে  ক্ষমা প্রদর্শন করেতো এটা বড় হিম্মতের কাজ। (সূরা শূরা : ৪৩)হাদীস শরীফে এসেছেআল্লাহ তিন ব্যক্তিকে পছন্দ করেনতাদের একজন  ব্যক্তিযার একজন মন্দপ্রতিবেশী রয়েছেসে তাকে কষ্ট দেয়। তখন  ব্যক্তি ছবর করে এবং আল্লাহর ছাওয়াবের আশা রাখে।একপর্যায়ে  প্রতিবেশীর ইন্তেকাল বা চলে যাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাকে মুক্তি দেন। (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ২১৩৪০আলমুসতাদরাকহাকেম  পৃ৮৯শুআবুল ঈমানবায়হাকীহাদীস ৯১০২)
দশগুণ বেশি গুনাহ
প্রতিবেশীর হক আদায় করা যেমন জরুরি প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া বা তার হক নষ্ট করা তেমনি মস্ত বড়গুনাহ। একই অন্যায় প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে করলে অন্যের তুলনায় দশ গুণ বেশি বা বড় বলে গণ্য হয়।
হযরত মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রাবলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সাহাবীগণকেযিনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বললোতাতো হারাম। আল্লাহ  তাঁর রাসূল তা হারাম ঘোষণাকরেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনকোনো ব্যক্তি দশজন নারীর সাথে যিনাকরলে যে গুনাহ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা তার চেয়েও বেশি  মারাত্মক গুনাহ। তারপর রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে চুরি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বললোতাতো হারাম।আল্লাহ  তাঁর রাসূল তা হারাম ঘোষণা করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,দশ বাড়িতে চুরি করা যত বড় অন্যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে চুরি করা এর চেয়েও বড় অন্যায়। (মুসনাদেআহমাদহাদীস ২৩৮৫৪আলআদাবুল মুফরাদ,হাদীস ১০৩শুআবুল ঈমান বায়হাকী
হাদীস ৯৫৫২)
জমির আইল ঠেলা
অনেক সময় এমন হয় যে দুই প্রতিবেশী তাদের বাড়ির সীমানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। যে প্রতিবেশীরশক্তি বেশি সে জোরপূর্বক নিজের সীমানা বাড়িয়ে নেয়। এটা বসতবাড়ির ক্ষেত্রে যেমন হয় ফসলের জমিরপ্রতিবেশীর সাথে আরো বেশি হয়। যাকে বলে ‘আইল ঠেলা সামান্য যমিন ঠেলে সে নিজের ঘাড়ে জাহান্নামটেনে আনল। যতটুকু যমিন সে জবরদস্তি বাড়িয়ে নিল  সে নিজেকে তার চেয়ে সাতগুণ বেশি জাহান্নামেরদিকে ঠেলে নিল। হাদীস শরীফে এসেছেযে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে এক বিঘত জমি দখল করলকিয়ামতের দিন জমির সাত তবক পরিমাণ তার গলায় বেড়ি আকারে পরিয়ে দেয়া হবে। (সহীহ মুসলিমহাদীস ১৬১১)
এক মন্দ প্রতিবেশীর ঘটনা
প্রতিবেশীর সাথে মানুষের সম্পর্ক সামান্য সময়ের নয়বরং সকাল-সন্ধ্যারাত-দিনমাস  বছরের বাসারা জীবনের।  প্রতিবেশী যদি মন্দ হয় তাহলে ভোগান্তির আর শেষ থাকে না। তেমনি এক মন্দপ্রতিবেশীর ঘটনা হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে।
হযরত আবু হুরাইরা রাথেকে বর্ণিতএক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসেতার প্রতিবেশীর ব্যাপারে অভিযোগ করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনতুমিছবর কর। এভাবে সে তিনবার আসার পর তৃতীয় বা চতুর্থ বারে নবীজী তাকে বললেনতোমার বাড়িরআসবাবপত্র রাস্তায় নিয়ে রাখ। সাহাবী তাই করলেন। মানুষ সেখান দিয়ে যচ্ছিল এবং  প্রতিবেশীকেঅভিশাপ দিচ্ছিল। তখন  প্রতিবেশী নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে বললআল্লাহররাসূলমানুষ আমাকে যা তা বলছে। নবীজী বললেনমানুষ তোমাকে কী বলছেসে বললমানুষ আমাকেলানত করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনতার আগেই আল্লাহ তোমাকে লানতকরেছেন। সে বললআল্লাহর রাসূলআমি আর এমনটি করব না (প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব না।) তারপরঅভিযোগকারী নবীজীর দরবারে এলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনতুমি (প্রতিবেশীরঅনিষ্ট থেকেনিরাপদ হয়েছ। (আলমুসতাদরাক,হাকেমহাদীস ৭৩০৩আলমুজামুল কাবীর,তবারানী,হাদীস ৩৫৬সহীহ ইবনে হিববানহাদীস ৫২০)
দুই নারীর দৃষ্টান্তকে জান্নাতী?
প্রতিবেশীর সাথে মন্দ আচরণ ব্যক্তির সব আমল বরবাদ করে দেয়। তাকে নিয়ে ফেলে জাহান্নামে। হযরতআবু হুরাইরা রাথেকে বর্ণিতএক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললএকনারীর ব্যাপারে প্রসিদ্ধসে বেশি বেশি (নফলনামায পড়েরোযা রাখেদুই হাতে দান করে। কিন্তু যবানেরদ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় (তার অবস্থা কী হবে?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,সে জাহান্নামে যাবে। আরেক নারী বেশি (নফলনামাযও পড়ে নাখুব বেশি রোযাও রাখে না আবার তেমনদান সদকাও করে নাসামান্য দু-এক টুকরা পনির দান করে। তবে সে যবানের দ্বারা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়না (এই নারীর ব্যাপারে কী বলেন?) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনসে জান্নাতী। (মুসনাদেআহমাদহাদীস ৯৬৭৫আলআদাবুল মুফরাদবুখারীহাদীস ১১৯)
প্রতিবেশীর দোষ ঢেকে রাখব
পাশাপাশি থাকার কারণে একে আপরের ভালো মন্দ কিছু জানাজানি হয়ই। গোপন করতে চাইলেও অনেককিছু গোপন করা যায় না। প্রতিবেশীর এসকল বিষয় পরস্পরের জন্য আমানত। নিজের দুনিয়া আখিরাতের কল্যাণেই একে অপরের দোষ ঢেকে রাখা জরুরি। আমি যদি তার দোষ প্রকাশ করে দিই তাহলেসেও আমার দোষ প্রকাশ করে দিবে। আর আমি যদি তার দোষ ঢেকে রাখি তাহলে সেও আমার দোষ গোপনরাখবে। এমনকি এর বদৌলতে আল্লাহও আমার এমন দোষ গোপন রাখবেনযা প্রতিবেশীও জানে না। হাদীসশরীফে এসেছেযে তার মুসলিম ভাইয়ের দোষ ঢেকে রাখে  আল্লাহও কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকেরাখবেন। (সহীহ মুসলিমহাদীস ২৫৮০)
মুসলিম  আত্মীয় হিসেবে প্রতিবেশীর হক
প্রতিবেশীর যত হক উপরে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো তো প্রতিবেশী মুসলিম হোক অমুসলিম হোক সবারইহক। আর প্রতিবেশী যদি মুসলিম হয় বা মুসলিম  আত্মীয় উভয়টিই হয় তাহলে এসকল হকের সাথে মুসলিম আত্মীয় হিসেবে যত হক আছে সবই তাদের প্রাপ্য।  বিষয়টিও স্মরণ রাখা জরুরি।
আল্লাহ আমাদের প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।