Sunday, February 14, 2016
Tuesday, February 2, 2016
প্রবাসী ভাই দের উদ্দেশে:
প্রবাসী ভাই দের উদ্দেশে:
জীবন-জীবিকা এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতির প্রবাস জীবনে পাড়ি জমায়,
কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়ে জীবন জিবিকা-যুদ্ধ,করে অর্থ-উপার্জন করে,
তার পর জীবনের অগ্রগতি কঠিন-বাদা হয়ে দাড়ায়,দেশে রেখে যাওয়া স্ত্রী
কিছু স্বামী যখন দেশে আসতে চায়
স্ত্রী বলে কিসের জন্য-স্বামীত বুঝতে পারে নাই
তাই মাসে মাসে টাকা পাটায়,স্বামীত জানে না স্ত্রী অবৈধ
সম্পর্ক লিপ্ত স্বামীকে প্রয়োজন মনে করে না,
বউ-মেয়ে পরকিয়া প্রেমে...হাবু-ডুবু খাচছে অবৈধ পুরুষ ও নারীর
তাই স্বামী কে প্রয়োজন মনে করে না,অবৈধ প্রেমিকের যৌন ব্যভিচার/সঙ্গে
যৌন মিলনে জিনায় লিপ্ত হয়ে আছে-লজ্জা হীনা নারী
-{আল্লাহ যদি আপনার বিবেক দিয়ে থাকে ,মন্তব্য করার আগে Status দেখে নিবে। বিবেক বানদের জন্য,নারী সুন্দর এবং মধু সুরে কথার শুনে বিবেক যেন ও হারিয়ে না যায়। ............আল্লাহ-পরকাল যদি বিশ্বাস করেন ।
অন্যায় না কমার একটি মূল কারণ হল অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার কারনে।
জীবন-জীবিকা এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতির প্রবাস জীবনে পাড়ি জমায়,
কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়ে জীবন জিবিকা-যুদ্ধ,করে অর্থ-উপার্জন করে,
তার পর জীবনের অগ্রগতি কঠিন-বাদা হয়ে দাড়ায়,দেশে রেখে যাওয়া স্ত্রী
কিছু স্বামী যখন দেশে আসতে চায়
স্ত্রী বলে কিসের জন্য-স্বামীত বুঝতে পারে নাই
তাই মাসে মাসে টাকা পাটায়,স্বামীত জানে না স্ত্রী অবৈধ
সম্পর্ক লিপ্ত স্বামীকে প্রয়োজন মনে করে না,
বউ-মেয়ে পরকিয়া প্রেমে...হাবু-ডুবু খাচছে অবৈধ পুরুষ ও নারীর
তাই স্বামী কে প্রয়োজন মনে করে না,অবৈধ প্রেমিকের যৌন ব্যভিচার/সঙ্গে
যৌন মিলনে জিনায় লিপ্ত হয়ে আছে-লজ্জা হীনা নারী
-{আল্লাহ যদি আপনার বিবেক দিয়ে থাকে ,মন্তব্য করার আগে Status দেখে নিবে। বিবেক বানদের জন্য,নারী সুন্দর এবং মধু সুরে কথার শুনে বিবেক যেন ও হারিয়ে না যায়। ............আল্লাহ-পরকাল যদি বিশ্বাস করেন ।
অন্যায় না কমার একটি মূল কারণ হল অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার কারনে।
প্রতিবেশীর হক : সচেতনতা প্রয়োজন
প্রতিবেশী। মানবসমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ফলে ইসলামে প্রতিবেশীর হককে অনেক গুরুত্ব দেয়াহয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জিবরীল (আ.) আমাকে প্রতিবেশীর হকেরব্যাপারে এত বেশি তাকিদ করেছেন যে, আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিবেশীকে মিরাছের অংশিদার বানিয়েদেয়া হবে। (দ্র.সহীহ বুখারী ৬০১৪;সহীহ মুসলিম ২৫২৪) কিন্তু আজকাল এ বিষয়ে আমাদের মাঝে চরমঅবহেলা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে শহরের মানুষের মাঝে। বছরের পর বছর পার হয় পাশের বাড়িরকারো সাথে কোনো কথা হয় না, খোঁজ খবর নেওয়া হয় না; বরং বিভিন্নভাবে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া হয়।অথচ প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ ও তাকে কষ্ট না দেওয়াকে ঈমানের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীরসাথে সদাচরণ করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৮৫) আরেক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন, যে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। (সহীহ মুসলিম,হাদীস : ১৮৩)।
প্রতিবেশী কে?
প্রতিবেশী বলতে মুসলিম, কাফের, নেক বান্দা,ফাসেক, বন্ধু, শত্রু,পরদেশী, স্বদেশী, উপকারী,ক্ষতিসাধনকারী, আত্মীয়, অনাত্মীয়, নিকটতম বা তুলনামূলক একটু দূরের প্রতিবেশী সবাই অন্তর্ভুক্ত।
আর প্রতিবেশী সাধারণত তিন শ্রেণীর হয়ে থাকে এবং তাদের হকও বিভিন্ন দিকে লক্ষ করে কম বেশী হয়েথাকে। ১. যার এক দিক থেকে হক থাকে। সে হল, অনাত্মীয় বিধর্মী প্রতিবেশী। এ ব্যক্তির হক শুধু প্রতিবেশীহওয়ার ভিত্তিতে। ২. যার দুই দিক থেকে হক থাকে। সে হল, মুসলিম প্রতিবেশী, যার সাথে আত্মীয়তারকোনো সম্পর্ক নেই। এ ব্যক্তির হক প্রতিবেশী এবং মুসলিম হওয়ার দিক থেকে। ৩. যার তিন দিক থেকে হকথাকে। সে হল, মুসলিম আত্মীয় প্রতিবেশী। এ ব্যক্তির হক প্রতিবেশী, মুসলিম ও আত্মীয় হওয়ার দিক থেকে।তবে প্রত্যেক শ্রেণীই যেহেতু প্রতিবেশী তাই প্রতিবেশীর সকল হকের ক্ষেত্রে সবাই সমান হকদার। আরপ্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখা, বিপদে আপদে এগিয়ে যাওয়া, একে অপরের সুখ-দুঃখের শরিক হওয়া, হাদিয়াআদান প্রদান করা, সেবা শুশ্রূষা করা, প্রতিবেশীর কেউ মারা গেলে সান্ত্বনা দেওয়া, কাফন দাফনে শরিকহওয়া, একে অপরের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেওয়া, প্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া, প্রতিবেশীরকষ্টের কারণ হয় এমন সব ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি সবই একজন মুমিনের স্বভাবজাতবিষয় হওয়া উচিত।
প্রতিবেশীর হক কুরআনে
আল্লাহ তাআলা আলকুরআনুল কারীমে সূরা নিসার ৩৬ নং আয়াতে আল্লাহর ইবাদাত ও তার সাথে কাউকেশরিক না করা-এই বিধানের সাথে উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের হক। তার মধ্যে রয়েছে মাতাপিতার হক, আত্মীয় স্বজনের হক, এতীমের হক ইত্যাদি। এসব গুরুত্বপূর্ণ হকের সাথেই আল্লাহ প্রতিবেশীরহককে উল্লেখ করেছেন। এ থেকেই বোঝা যায়, প্রতিবেশীর হককে আল্লাহ কত গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তা রক্ষাকরা আমাদের জন্য কত জরুরি। আল্লাহ বলেছেন, (অর্থ) তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং কোনো কিছুকেতার সাথে শরিক করো না। এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতীম, অভাবগ্রস্থ, নিকট-প্রতিবেশী, দূর-প্রতিবেশী, সংগী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের দাস-দাসীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর। নিশ্চয় আল্লাহদাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না।
উত্তম প্রতিবেশী কে?
এ প্রশ্নের সহজ উত্তর হল, যে প্রতিবেশীর সাথে ভালো আচরণ করে এবং প্রতিবেশীর সকল হক যথাযথভাবেআদায় করে। ফলে প্রতিবেশী তার উপর সন্তুষ্ট থাকে এবং আল্লাহ্ও তার উপর সন্তুষ্ট থাকেন। হযরতআব্দুল্লাহ ইবনে আম্র রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ... যে স্বীয় প্রতিবেশীরদৃষ্টিতে ভালো সেই সর্বোত্তম প্রতিবেশী। (সহীহ ইবনে খুযাইমা হা. ২৫৩৯; শুআবুল ঈমান বায়হাকী, হা.৯৫৪১; মুসনাদে আহমদ হা. ৬৫৬৬)
প্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখা ঈমানের দাবি
হযরত ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঐ ব্যক্তি মুমিননয় যে পেটপুরে খায় অথচ তার পাশের প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে। (মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ২৬৯৯;আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীস ১১২)
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, অনেক প্রতিবেশীই এমন আছে, যাদের দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তারাঅভাবে দিন কাটাচ্ছে। আবার আমার কাছে কখনো চাইবেও না। কুরআন মাজীদে এদেরকে ‘মাহরূম’ বলাহয়েছে, সূরা যারিয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,(অর্থ) এবং তাদের সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও মাহরূমের(বঞ্চিতের) হক। (সূরা যারিয়াত : ১৯) এক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য, নিজে থেকে তাদের খোঁজ খবর রাখা এবংদেওয়ার ক্ষেত্রে এমন পন্থা অবলম্বন করা, যাতে সে লজ্জা না পায়। এজন্যইতো যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে এটাবলে দেয়া জরুরি নয় যে, আমি তোমাকে যাকাত দিচ্ছি; বরং ব্যক্তি যাকাতের যোগ্য কি না এটুকু জেনেনেয়াই যথেষ্ট।
আর আমি প্রতিবেশীর প্রয়োজন পুরা করব তাহলে আল্লাহ আমার প্রয়োজন মিটিয়ে দিবেন এবং আমার সহায়হবেন। হাদীস শরীফে এসেছে, যে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পুরা করে আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরা করেন। (সহীহবুখারী,হাদীস ২৪৪২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৮০) &
প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ
প্রতিবেশী আমার জীবনের আবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। তার সাথে আমার আচরণ সুন্দর হবে তা কি বলে বোঝাতেহয়? আর আমি যদি মুমিন হই তাহলে তো তা আমার ঈমানের দাবি। হযরত আবু শুরাইহ্ রা. বলেন, আমারদুই কান শ্রবণ করেছে এবং আমার দুই চক্ষু প্রত্যক্ষ করেছে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, যে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং আখেরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকে সম্মান করে।সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় আছে ‘সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করে।’
(সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৮)
হাদিয়া আদান-প্রদান
প্রতিবেশীদের পরস্পরের সুসম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হাদিয়ার আদান-প্রদান খুবই কার্যকর পন্থা। এর মাধ্যমেহৃদ্যতা সৃষ্টি হয় ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরাহাদিয়া আদান-প্রদান কর। এর মাধ্যমে তোমাদের মাঝে হৃদ্যতা সৃষ্টি হবে।’ (দ্র. আল আদাবুলমুফরাদ,বুখারী হাদীস : ৫৯৪)
তরকারির ঝোল বাড়িয়ে দাও
প্রতিবেশীকে শরীক কর
এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীকে হাদিয়া দেওয়ার বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যে, সামান্য জিনিস হাদিয়াদিতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। এক হাদীসে আছে, আল্লাহররাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু যর রা.- কে বলেন, হে আবু যর, তুমি ঝোল (তরকারি)রান্না করলে তার ঝোল বাড়িয়ে দিও এবং তোমার প্রতিবেশীকে তাতে শরিক করো। (সহীহ মুসলিম,হাদীস২৬২৫)
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদেরকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন, হে মুসলিমনারীগণ! তোমাদের কেউ যেন প্রতিবেশীকে হাদিয়া দিতে সংকোচবোধ না করে। যদিও তা বকরীর খুরেরমত একটি নগন্য বস্ত্তও হয়। (দ্র. সহীহ বুখারী ৬০১৭)
সুতরাং প্রতিবেশী নারীরাও নিজেদের মাঝে হাদিয়া আদান-প্রদান করবেন।
ভালো কিছু রান্না হলে...
আমার বাসায় ভালো কিছু রান্না হলে প্রতিবেশীকে না জানালেও রান্নার ঘ্রাণ তো তাকে জানিয়ে দেয়; পাশেরবাড়িতে ভালো কিছু রান্না হচ্ছে। বড়দের কথা বাদ দিলাম, ঘ্রাণ পেয়ে ছোটদের মনে তো আগ্রহ জাগবে তাখাওয়ার। সুতরাং তাদের দিকে লক্ষ্য রেখে ঝোল বাড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে হোক বা নিজে একটু কম খাওয়ারমাধ্যমে হোক সামান্য কিছু যদি পাঠিয়ে দিই তাহলে ঐ ছোট্ট শিশুর মনের ইচ্ছা যেমন পুরা করা হবে তেমনিআল্লাহও খুশি হবেন। যা আমার রিযিকে বরকতের কারণ হবে ইনশাআল্লাহ। যে খাদেম খানা তৈরি করলতাকেও খানায় শরিক করার কথা হাদীসে এসেছে। কারণ এ খাবার প্রস্ত্তত করতে গিয়ে সে এর ধোঁয়া যেমনসহ্য করেছে তেমনি এর সুঘ্রাণও তার নাকে ও মনে লেগেছে। সুতরাং...। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের খাদেম যখন তোমাদের জন্য খানা প্রস্ত্তত করে নিয়ে আসে তখন তাকে যদিসাথে বসিয়ে খাওয়াতে না-ও পার তাকে দু এক লোকমা হলেও দাও। (সামান্য কিছু দিয়ে হলেও তাকে এইখানায় শরিক কর) কারণ, সে-ই তো এই খানা প্রস্ত্তত করার কষ্ট ও আগুনের তাপ সহ্য করেছে। (সহীহবুখারী, হাদীস ৫৪৬০)
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়,ভালো কিছু রান্না হলে মাঝে মধ্যে কাজের বুয়ার সন্তানদের জন্য কিছু দেয়াউচিত। অনেক সময় খাবার বেঁচে যায়। হতে পারে আমার ঘরের এ বেঁচে যাওয়া খাবারই কাজের বুয়ারসন্তানদের জন্য হবে ‘ঈদের খাবার’। আর আশা করা যায় এর বিনিময়ে আল্লাহ আমার জন্য জান্নাতেরমেহমানদারির ফয়সালা করবেন।
প্রতিবেশী যদি দরিদ্র হয়
আর প্রতিবেশী যদি দরিদ্র হয় তাহলে এ বিষয়ে তার হক আরো বেশি। কারণ দরিদ্রকে খানা খাওয়ানো যেমনঅনেক সওয়াবের কাজ তেমনি দরিদ্রকে খানা না-খাওয়ানো জাহান্নামে যাওয়ার একটি বড় কারণ। কুরআনমজীদে ‘ছাকার’ নামক জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হিসেবে নামায না পড়ার বিষয়টির সাথে সাথে দরিদ্রকেখানা না খাওয়ানোও গুরুত্বসহকারে উল্লেখিত হয়েছে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, (জাহান্নামীকে জিজ্ঞেসকরা হবে) (অর্থ) কোন বিষয়টি তোমাদেরকে ‘ছাকার’ নামক জাহান্নামে ঠেলে দিয়েছে? (তারা উত্তরে বলবে)আমরা নামায পড়তাম না এবং দরিদ্রকে খানা খাওয়াতাম না। (সূরা মুদ্দাছ্ছির ৪২-৪৪)
নিকটতম প্রতিবেশীকে আগে হাদিয়া দিব, যদিও সে বিধর্মী হয়
প্রতিবেশীর মধ্যে যেমন আছে নিকট প্রতিবেশী, নিকটতম প্রতিবেশী ও তুলনামূলক একটু দূরের প্রতিবেশীতেমনি আছে মুসলিম ও বিধর্মী। এখন কাকে হাদিয়া দিব বা কাকে আগে দিব? হযরত আয়েশা রা. বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম-আমার দুই প্রতিবেশী। এদের কাকেহাদিয়া দিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে তোমার বেশি নিকটবর্তী। (সহীহ বুখারী,
হাদীস ৬০২০)
মুজাহিদ রহ. বলেন, একবার আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আম্র রা.-এর কাছে ছিলাম। তার গোলাম একটিবকরীর চামড়া ছাড়াচ্ছিল। তখন তিনি বললেন, তোমার এ কাজ শেষ হলে সর্বপ্রথম আমাদের ইহুদীপ্রতিবেশীকে দিবে। তখন এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহ আপনার এসলাহ করুন। আপনি ইহুদীকে আগে দিতেবলছেন! তখন তিনি বললেন, (হাঁ) আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রতিবেশীর হকেরবিষয়টি এত বেশি গুরুত্ব দিয়ে বলতে শুনেছি যে, আমাদের আশংকা হয়েছে বা মনে হয়েছে, প্রতিবেশীকেমিরাছের হকদার বানিয়ে দেয়া হবে। (আল আদাবুল মুফরাদ, বুখারী,হাদীস ১২৮; শরহু মুশকিলিল আছার,তহাবী,হাদীস ২৭৯২)
প্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিব
অনেক সময় এমন হয়, প্রতিবেশীর প্রয়োজনে কিছু ছাড় দিতে হয়। কিংবা নিজের কিছু ক্ষতি স্বীকার করলেপ্রতিবেশীর অনেক বড় উপকার হয় বা সে অনেক বড় সমস্যা থেকে বেঁচে যায়। তেমনি একটি বিষয় হাদীসশরীফে উদ্ধৃত হয়েছে, যা মুমিনকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,কোনো প্রতিবেশী যেন অপর প্রতিবেশীকে তার দেয়ালে কাঠ স্থাপন করতে বাধা না দেয়। (সহীহবুখারী,হাদীস ২৪৬৩; সহীহ মুসলিম,হাদীস ১৬০৯)
আরেক হাদীসে এসেছে, যে তার (মুসলিম) ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে স্বয়ং আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরাকরেন। (সহীহ মুসলিম,হাদীস ২৫৮০)
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আদান প্রদান
আমাদের প্রায় সকলেরই সূরা মাউন মুখস্থ আছে। ‘মাউন’ অর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। দৈনন্দিন জীবনেআমাদের ছোট খাট অনেক জিনিসেরই প্রয়োজন হয়। কোনো বস্ত্ত হয়তো সামান্য, কিন্তু তার প্রয়োজননিত্য। যেমন লবন। খুবই সামান্য জিনিস, কিন্তু তা ছাড়া আমাদের চলে না। কখনও এমনও হয় দশ টাকারলবন কেনার জন্য বিশ টাকা রিক্সা ভাড়া খরচ করতে হবে বা এখন এমন সময় যে তা পাওয়া যাবে না।অথচ লবন না হলে চলবেই না। তখন আমরা পাশের বাড়ি বা প্রতিবেশীর দ্বারস্থ হই। এমন সময় এ সাধারণবস্ত্তটি যদি কেউ না দেয় তাহলে নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। কোনো প্রতিবেশী যদি এমন হয় তাহলেতাকে ধিক শত ধিক। আল্লাহও তাকে ভৎর্সনা দিয়েছেন। সূরা মাউনে আল্লাহ বলেছেন, (অর্থ) সুতরাং দুর্ভোগসেই সালাত আদায়কারীদের, যারা তাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন, যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে,এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোট-খাট সাহায্যদানে বিরত থাকে। (সূরা মাউন: ৪-৭)
হক্কে শুফ্আ
এটি প্রতিবেশীর গুরুত্বপূর্ণ একটি হক। নিজের জমি বা বাড়ি যদি কেউ বিক্রি করতে চায় তাহলে সে ব্যাপারেপার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ তাকে আগে জানাতে হবে যে, আমি আমার বাড়ি বা জমিবিক্রি করতে চাই তুমি তা কিনবে কি না। যদি সে কিনতে না চায় তাহলে অন্যের কাছে বিক্রি করা যাবে।তাকে না জানিয়ে কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না। করলে সে দাবি করতে পারবে যে, আমি এই জমি ক্রয়করব। এটা তার হক। কারণ, হতে পারে এ জমিটি তার প্রয়োজন বা এমন ব্যক্তি তা ক্রয় করল যার কারণেসে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে ইত্যাদি। আর একেই শরীয়তের পরিভাষায় ‘হক্কে শুফ্আ’ বলে।
হাদীস শরীফে প্রতিবেশীর এ হকটিকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন, যদি কেউ তার জমি বিক্রি করতে চায় তাহলে সে যেন তার প্রতিবেশীকে জানায়। (সুনানে ইবনেমাজাহ, হাদীস ২৪৯৩)
আরেক হাদীসে হযরত ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘শুফ্আ’-র বিষয়ে প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে বেশি। প্রতিবেশি উপস্থিত না থাকলেও তার অপেক্ষা করতেহবে। এটা তখন যখন তাদের উভয়ের চলাচলের পথ এক হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হা. ২৪৯৪; জামেতিরমিযী, হা. ১৩৬৯) এ ধরনের আরো অনেক হাদীসে হক্কে শুফ্আর বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।
মন্দ প্রতিবেশী থেকে আল্লাহ্র পানাহ
মন্দ প্রতিবেশী থেকে আমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। কারণ একজন মন্দ প্রতিবেশী সাধারণ জীবনযাত্রাকেব্যাহত করবে বা আমাকেও মন্দের দিকে নিয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা মন্দ প্রতিবেশী থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাও।(দ্র. সুনানে নাসায়ী,হাদীস ৫৫০২; শুআবুল ঈমান,বায়হাকী হা. ৯১০৬)
আমি হব না মন্দ প্রতিবেশী
আমি কারো জন্য মন্দ প্রতিবেশী হব না। যেমনিভাবে আমি চাই না যে, আমার প্রতিবেশীটি মন্দ হোকতেমনিভাবে আমাকেও ভাবতে হবে, আমিও যেন আমার প্রতিবেশীর কষ্টের কারণ না হই। হযরত নাফেইবনে আব্দুল হারিস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উত্তম প্রতিবেশীব্যক্তির সৌভাগ্যের কারণ...। (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ১৫৩৭২; আল আদাবুল মুফরাদ, বুখারী,হাদীস১১৬)
আখেরাতের প্রথম বাদী-বিবাদী
প্রতিবেশীর হক নষ্ট করা বা তাকে কষ্ট দেওয়া অনেক বড় অন্যায়। কখনো দুনিয়াতেই এর সাজা পেতে হয়আর আখেরাতের পাকড়াও তো আছেই। আমার অর্থবল বা জনবল আছে বলে আমি প্রতিবেশীর হক নষ্টকরে পার পেয়ে যাব এমনটি নয়। হাঁ, দুনিয়ার আদালত থেকে হয়ত পার পেয়ে যাব, কিন্তু আখেরাতেরআদালত থেকে আমাকে কে বাঁচাবে? হযরত উকবা ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন প্রথম বাদী-বিবাদী হবে দুই প্রতিবেশী। (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ১৭৩৭২; আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ৮৩৬) প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব না
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার বিষয়টিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমানের দুর্বলতা বলে চিহ্নিতকরেছেন। কোনো ব্যক্তি মুমিন আবার প্রতিবেশীকে কষ্টও দেয় তা ভাবা যায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়! আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!! আল্লাহর শপথ সেমুমিন নয়!!! সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, সে কে হে আল্লাহর রাসূল? রাসূ্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। (সহীহ বুখারী,
হাদীস ৬০১৬)
আরেক হাদীসে এসেছে, যে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে ও আখেরাতে বিশ্বাস করে সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকেকষ্ট না দেয়। (দ্র. সহীহ বুখারী হা. ৬০১৮)
কষ্ট দেওয়ার বিভিন্ন রূপ হতে পারে। যেমন, জানালা দিয়ে উঁকি দেয়া, চলা ফেরার ক্ষেত্রে দৃষ্টি অবনত নারাখা, প্রতিবেশীর বাসার সামনে ময়লা ফেলা, জোরে ক্যাসেট বাজানো, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় প্রতিবেশীরঘুম বা বিশ্রামের ক্ষতি করা, প্রতিবেশীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া, গৃহপালিত পশুর মাধ্যমে কষ্টদেওয়া ইত্যাদি। নিজের গৃহপালিত পশু ছেড়ে দিলাম আর তা প্রতিবেশীর ফসলের ক্ষতি করল কিংবাপ্রতিবেশীর অবলা পশু এসে কিছু নষ্ট করেছে বলে আমি পশুটির কোনো ক্ষতি করলাম বা পশুর মালিককেগালি দিলাম। এসকল ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া ও ধৈর্য্য ধারণ করা উচিত। আল্লাহ এর প্রতিদান দিবেন।
প্রতিবেশী কষ্ট দিলে কী করব?
হতে পারে আমার প্রতিবেশী আমাকে কষ্ট দেয় তাই বলে কি আমিও প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব? তা হতে পারে না।মুমিন তো সর্বদা ভালো আচরণ করে। মুমিনের গুণ তো
أحسن إلى من أساء إليك
তোমার সাথে যে মন্দ আচরণ করে তুমি তার সাথে ভালো আচরণ কর।’ সে তো কুরআনের ঐ আয়াতশুনেছে
ولمن صبر وغفر إن ذلك لمن عزم الأمور.
প্রকৃতপক্ষে যে সবর অবলম্বন করে ও ক্ষমা প্রদর্শন করে, তো এটা বড় হিম্মতের কাজ। (সূরা শূরা : ৪৩)হাদীস শরীফে এসেছে, আল্লাহ তিন ব্যক্তিকে পছন্দ করেন, তাদের একজন ঐ ব্যক্তি, যার একজন মন্দপ্রতিবেশী রয়েছে, সে তাকে কষ্ট দেয়। তখন ঐ ব্যক্তি ছবর করে এবং আল্লাহর ছাওয়াবের আশা রাখে।একপর্যায়ে ঐ প্রতিবেশীর ইন্তেকাল বা চলে যাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাকে মুক্তি দেন। (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ২১৩৪০; আলমুসতাদরাক, হাকেম খ. ২ পৃ. ৮৯; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৯১০২)
দশগুণ বেশি গুনাহ
প্রতিবেশীর হক আদায় করা যেমন জরুরি প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া বা তার হক নষ্ট করা তেমনি মস্ত বড়গুনাহ। একই অন্যায় প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে করলে অন্যের তুলনায় দশ গুণ বেশি বা বড় বলে গণ্য হয়।
হযরত মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সাহাবীগণকেযিনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বললো, তাতো হারাম। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তা হারাম ঘোষণাকরেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, কোনো ব্যক্তি দশজন নারীর সাথে যিনাকরলে যে গুনাহ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা তার চেয়েও বেশি ও মারাত্মক গুনাহ। তারপর রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে চুরি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বললো, তাতো হারাম।আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তা হারাম ঘোষণা করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,দশ বাড়িতে চুরি করা যত বড় অন্যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে চুরি করা এর চেয়েও বড় অন্যায়। (মুসনাদেআহমাদ, হাদীস ২৩৮৫৪; আলআদাবুল মুফরাদ,হাদীস ১০৩; শুআবুল ঈমান বায়হাকী
হাদীস ৯৫৫২)
জমির আইল ঠেলা
অনেক সময় এমন হয় যে দুই প্রতিবেশী তাদের বাড়ির সীমানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। যে প্রতিবেশীরশক্তি বেশি সে জোরপূর্বক নিজের সীমানা বাড়িয়ে নেয়। এটা বসতবাড়ির ক্ষেত্রে যেমন হয় ফসলের জমিরপ্রতিবেশীর সাথে আরো বেশি হয়। যাকে বলে ‘আইল ঠেলা’। সামান্য যমিন ঠেলে সে নিজের ঘাড়ে জাহান্নামটেনে আনল। যতটুকু যমিন সে জবরদস্তি বাড়িয়ে নিল সে নিজেকে তার চেয়ে সাতগুণ বেশি জাহান্নামেরদিকে ঠেলে নিল। হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে এক বিঘত জমি দখল করল, কিয়ামতের দিনঐ জমির সাত তবক পরিমাণ তার গলায় বেড়ি আকারে পরিয়ে দেয়া হবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬১১)
এক মন্দ প্রতিবেশীর ঘটনা
প্রতিবেশীর সাথে মানুষের সম্পর্ক সামান্য সময়ের নয়; বরং সকাল-সন্ধ্যা, রাত-দিন, মাস ও বছরের বাসারা জীবনের। এ প্রতিবেশী যদি মন্দ হয় তাহলে ভোগান্তির আর শেষ থাকে না। তেমনি এক মন্দপ্রতিবেশীর ঘটনা হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে।
হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসেতার প্রতিবেশীর ব্যাপারে অভিযোগ করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, তুমিছবর কর। এভাবে সে তিনবার আসার পর তৃতীয় বা চতুর্থ বারে নবীজী তাকে বললেন, তোমার বাড়িরআসবাবপত্র রাস্তায় নিয়ে রাখ। সাহাবী তাই করলেন। মানুষ সেখান দিয়ে যচ্ছিল এবং ঐ প্রতিবেশীকেঅভিশাপ দিচ্ছিল। তখন ঐ প্রতিবেশী নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে বলল, আল্লাহররাসূল! মানুষ আমাকে যা তা বলছে। নবীজী বললেন, মানুষ তোমাকে কী বলছে? সে বলল, মানুষ আমাকেলানত করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তার আগেই আল্লাহ তোমাকে লানতকরেছেন। সে বলল, আল্লাহর রাসূল! আমি আর এমনটি করব না (প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব না।)। তারপরঅভিযোগকারী নবীজীর দরবারে এলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, তুমি (প্রতিবেশীরঅনিষ্ট থেকে) নিরাপদ হয়েছ। (আলমুসতাদরাক,হাকেম, হাদীস ৭৩০৩; আলমুজামুল কাবীর,তবারানী,হাদীস ৩৫৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৫২০)
দুই নারীর দৃষ্টান্ত; কে জান্নাতী?
প্রতিবেশীর সাথে মন্দ আচরণ ব্যক্তির সব আমল বরবাদ করে দেয়। তাকে নিয়ে ফেলে জাহান্নামে। হযরতআবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলল, একনারীর ব্যাপারে প্রসিদ্ধ, সে বেশি বেশি (নফল) নামায পড়ে, রোযা রাখে, দুই হাতে দান করে। কিন্তু যবানেরদ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় (তার অবস্থা কী হবে?)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,সে জাহান্নামে যাবে। আরেক নারী বেশি (নফল) নামাযও পড়ে না, খুব বেশি রোযাও রাখে না আবার তেমনদান সদকাও করে না; সামান্য দু-এক টুকরা পনির দান করে। তবে সে যবানের দ্বারা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়না (এই নারীর ব্যাপারে কী বলেন?)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে জান্নাতী। (মুসনাদেআহমাদ, হাদীস ৯৬৭৫; আলআদাবুল মুফরাদ, বুখারী, হাদীস ১১৯)
প্রতিবেশীর দোষ ঢেকে রাখব
পাশাপাশি থাকার কারণে একে আপরের ভালো মন্দ কিছু জানাজানি হয়ই। গোপন করতে চাইলেও অনেককিছু গোপন করা যায় না। প্রতিবেশীর এসকল বিষয় পরস্পরের জন্য আমানত। নিজের দুনিয়া ওআখিরাতের কল্যাণেই একে অপরের দোষ ঢেকে রাখা জরুরি। আমি যদি তার দোষ প্রকাশ করে দিই তাহলেসেও আমার দোষ প্রকাশ করে দিবে। আর আমি যদি তার দোষ ঢেকে রাখি তাহলে সেও আমার দোষ গোপনরাখবে। এমনকি এর বদৌলতে আল্লাহও আমার এমন দোষ গোপন রাখবেন, যা প্রতিবেশীও জানে না। হাদীসশরীফে এসেছে, যে তার মুসলিম ভাইয়ের দোষ ঢেকে রাখে আল্লাহও কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকেরাখবেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৮০)
মুসলিম ও আত্মীয় হিসেবে প্রতিবেশীর হক
প্রতিবেশীর যত হক উপরে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো তো প্রতিবেশী মুসলিম হোক অমুসলিম হোক সবারইহক। আর প্রতিবেশী যদি মুসলিম হয় বা মুসলিম ও আত্মীয় উভয়টিই হয় তাহলে এসকল হকের সাথে মুসলিমও আত্মীয় হিসেবে যত হক আছে সবই তাদের প্রাপ্য। এ বিষয়টিও স্মরণ রাখা জরুরি।
আল্লাহ আমাদের প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।
Subscribe to:
Comments (Atom)