Thursday, April 28, 2016

পৃথিবীর শেষ্ঠ আহবান বিশ্ব মানব জাতির কল্যান এর জন্য

আল্লাহু আকবার আল্লাহ্ মহান
Allah is the Greatest
الله أكبر
আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাহ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই
I bear witness that there is no God besides Allah
أشهد أن لا اله إلا الله
আশহাদু আল্লামুহাম্মাদার রাসুল্লাহ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ () আল্লাহর প্রেরিত দূত
I bear witness that, Muhammd (S) is the Messenger of Allah
أشهد أن محمدا رسول الله
হাইয়া আলাস্ সালাহ
নামাজের জন্য এসো
Come to Salah
حي على الصلاة
হাইয়া আলাল্ ফালাহ
সাফল্যের জন্য এসো
Come to Success.
حي على الفلاح
আস সালাতু খাইরুম মিনান্নাওম
ঘুম হতে নামাজ উত্তম
Prayer is better then sleeping
الصلاة خير من النوم
আল্লাহু আকবার
আল্লাহ সর্বশক্তিমান
Allah is the Greatest
الله أكبر
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই

There is no deity except Allah
لا إله إلا الله

ওয়াজ শুনে লাভ কি ?










কিছু লোক বলে ওয়াজ শুনে লাভ কি,যদি আমল না করেন,তাদের উদ্দেশ্য ওয়াজ না শুনলে কোরআন বুঝবেন কিভাবে,কোরআন বাণী প্রকাশ একমাত্র ওয়াজের এর মাধ্যম সম্ভব।মহান আল্লাহ কাছে হাজার শুকরিয়া যার ফলে আমি আপনি মুসলিম হতে পারছি, কোরআন বাণী একমাত্র ওয়াজ এর বুঝা সম্ভব আমল করতে হলে ওয়াজ শুনতে হবে।
আপনাকে বলছি বিবেক দিয়ে বিচার করবেন

Thursday, March 17, 2016

আপনার মনুষ্যেতর ভাল গুনগুলোই আপনাকে অনেক বড় করে তুলবে।


আপনি যদি অনেক বড় কিছু হতে চান, 


তবে সবার আগে একজন ভাল মানুষ 

হন। আপনার মনুষ্যেতর ভাল 

গুনগুলোই আপনাকে অনেক বড় করে 

তুলবে।নয়তো আপনার স্বভাবের খারাপ দিকগুলোর বিরুপ প্রভাব 

পরতে পারে আপনার সামাজিক এবং ব্যক্তিগত জীবনে যার কারনে 

আপনি অনেক বড় কিছু হয়েও ভাল মানুষদের মত সুখী হতে 

পারবেন না।

Monday, March 14, 2016

জীবন মানে কি?

জীবন মানে কি?
জীবনের কোন না কোন একটা সময়এই প্রশ্নটার সম্মূখীন হয়েছেন কিংবা হবেন। এমন কি আমার ও আপনার কাছে একই প্রশ্ন আপনার কাছে কি মনে হয়- জীবন মানে কি?
জীবন সম্পর্কে একেক জনের চিন্তা-ভাবনা, অভিব্যক্তি একেক রকম।
আমার জন্যও ব্যতিক্রম কিছুনা।
আমার কাছে জীবনের মানেটা কিছুটা এইরকম-

""জীবন মানে যুদ্ধ, যদি তুমি লড়তে পারো। জীবন মানে সংগ্রাম, যদি তুমি করতে পারো। জীবন মানে খেলা, যদি তুমি খেলতে পারো। জীবন মানে স্বপ্ন, যদি তুমি গড়তে পারো। জীবন মানে কষ্ট, যদি তুমি সইতে না পারো। জীবন মানে স্তব্ধতা, যদি তুমি বলতে না পারো। জীবন মানে হারিয়ে যাওয়া, যদি তুমি ধরে রাখতে না পারো। জীবন মানে ভালোবাসা, যদি তুমি বাসতে পারো। জীবন মানে জীবন, যদি তুমি বুঝতে পারো।""

তবুও প্রশ্ন থেকেই যায়-- জীবন মানে কি?

জীবনের বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর


জীবনের বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর। এটাই জীবন। জীবনের বাস্তবতার বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যতই নিষ্ঠুর হউক বা যতই কষ্ট হউক তা সয়ে নিতে হয়, মেনে নিতে হয় জীবনের প্রয়োজনেই। জীবনে কষ্ট আসলে মানসিক ভাকে যতটুকু ভেঙ্গে পড়বে জীবন তার দ্বিগুন পিছিয়ে যাবে। জীবনের সকল দূঃখ কষ্ট ও বাস্তবতাকে জীবনের অংশ হিসাবে মেনে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করার নামই হচ্ছে সুখ। 
জীবনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে , সে কখনও এক পথে চলেনা। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী চলেনা। জীবনের এই বৈশিষ্ট্যকে যারা মেনে নিতে পারেনা তারাই হতাশ জীবন যাপন করে। যারা মেনে নিতে পারে তারাই সুখী । কিন্তু সবাই কি পারে সব অবস্থা মেনে নিতে ? কিন্তু মেনে নিতে হয় জীবনের জন্য। জীবনের বাস্তবতা যারা মেনে নেয় তারা জীবনের আনন্দগুলো উপভোগ করে, জীবনকে উপভোগ করে। কষ্ট ও দুঃখগুলো থেকে তারা শিক্ষা নেয়। গৃহীত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে তারা জীবন সাজায়। ফলে তাদের জীবনের দুঃখ কষ্টগুলো বাহির থেকে দেখা যায়না বা তারা তা দেখাতে চায়না। দুঃখ কষ্ট তারা সামলে নিয়ে সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহন করে। তাদের সহনমাত্রা অনেক বেশী থাকায় একটা সময় এসে দুঃখ কষ্ট তাদেরকে ছুঁতে চায়না , ছুঁয় না। আমরা বলি চীরসূখী মানুষ । আসলে তা নয়। তারা দুঃখ কষ্টকে জীবনের অংশ হিসাবে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয়। তারা অনেক কষ্ট সয়ে , মেনে নিয়ে কষ্টকে জয় করে নিয়েছে।
জীবনের বাস্তবতায় আসা কষ্টকে মেনে না নিয়ে হতাশ হলেই জীবন হতাশ হয়। কিছু কিছু কষ্ট জীবনে আসে যা ক্ষুদ্র জীবনের কাছে পাহাড় তুল্য। হতাশ নয়, ধৈর্য্য ও সময়ই অনেক সমস্যার সমাধান দেয়।
কষ্ট কখনও কখনও এমন ভাবে আসে যখন চোখ বন্ধ হয়ে যায়। কান বধির হয়ে যায়।কন্ঠ বোবা হয়ে যায়। বুদ্ধি নির্বোধ হয়ে যায়। শরীর পঙ্গু হয়ে যায়। দিশেহারা জীবনে সব পরিকল্পনা ছাড়খার হয়ে যায়। তারপরও মানুষকে বেঁচে থাকতে হয় জীবনের অদৃশ্য প্রয়োজনে। আমি জানিনা কী সে প্রয়োজন। জীবনের কোথায় যেন কিসের একটা অদৃশ্য টান। আমার অনুপস্থিতিতে সব চলবে যথারীতি। তারপরও মনে হয় আমিই যেন সব সমস্যা সমাধানের একমাত্র ভরষা। মনে হয়, আমি ছাড়া সমস্যা সমাধানের আর কেউ নাই। আমাকে ছাড়া ? অসম্ভব। এই মনে করে বলেই হয়তো হাজার যন্ত্রনা সয়ে বেঁচে থাকা।
জীবনের অত্যাশিত বাস্তবতা কি যে কঠিন তা বোধ হয় মানুষ মাত্রই বুঝেন।

Sunday, March 13, 2016

আলহামদুলিল্লাহ সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর তালার জন্য



সুবাহানাল্লাহ্ আলহামদুলিল্লাহ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আল্লাহ্ হু আকবার।








Saturday, March 5, 2016

আল্লাহ ৯৯ নামের বাহিরে অন্য নামে ডাকা যাবে না,আপনি বলেন খোদ ফার্সি শব্দ পবিত্র কোরআনে নাজিল পূর্বে শুধু খোদ না আরও অনেক নামে ডাকা হত,বর্তমান সমাজে বেশিরভাগ মানুষই কোরআনের মর্মার্থ বোঝেনও না বোঝার বান করে।

আল্লাহকে কেন আল্লাহ নামে ডাকা হয়,অন্য নামে কেন ডাকা হয় না? এর উত্তর আছে পবিত্র কুর’আনে সূরা ইসরায় ১১০ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে-
“তোমরা তাঁকে ডাক আল্লাহ অথবা রহমান বলে।তোমরা তাঁকে যে নামেই ডাক না কেন সকল সুন্দর নামগুলো তো তাঁরই।”
আপনি মহান স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানা ওয়া তা’আলা কে ডাকতে পারেন যে কোন নামে সেটা হতে হবে সঠিক নাম,সেটা হবে বিশুদ্ধ নাম,এমন নাম হবে যেটা তিনি নিজেই দিয়েছেন।পবিত্র কুর’আন এবং সহীহ হাদিসে আল্লাহর নাম উল্লেখ আছে ৯৯ টি।আর সবার উপরে যে নাম সেটি হল “আল্লাহ”। আর এই কথাটা যে সুন্দর নামগুলো আল্লাহর,এটা সূরা ইসরার ১১০ নম্বর আয়াতে উল্লেখ আছে, এছাড়াও সূরা “ত্বহার” ৮ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে,সূরা আ’রাফ এর ১৮০ নম্বর আয়াতে উল্লেখ আছে, সূরা হাশরের ২৪ নম্বর আয়াতে আছে,এখানে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন-
“সুন্দর নামগুলো কেবল আল্লাহর জন্যই।”

কুরআন ও সুন্নাহ্ অনুসন্ধান করে আল্লাহর যে সমস্ত নাম জানা যায় তা
 নিম্নরূপ:
আল্লাহর
নাম সমূহ
নামের ব্যাখ্যা
الله
( আল্লাহ) আল্লাহ্‌। তিনি সৃষ্টিকুলের ইবাদত ও দাসত্বের অধিকারী। তিনিই মাবূদ-উপাস্য, তাঁর কাছে বিনীত হতে হয়, রুকূ-সিজদাসহ যাবতীয় ইবাদত-উপাসনা তাঁকেই নিবেদন করতে হয়।
الرَّحْمَنُ
(আর রাহমান) পরম দয়ালু, সৃষ্টির সকলের প্রতি ব্যাপক ও প্রশস্ত দয়ার অর্থবোধক নাম। এ নামটি আল্লাহর জন্যে সবিশেষ, তিনি ব্যতীত কাউকে রহমান বলা জায়েয নয়।
الرَّحِيمُ
(আর রাহীম) পরম করুণাময়, তিনি মুমিনদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষমাকারী করুণাকারী, তাঁর ইবাদতের প্রতি মুমিনদের হেদায়াত করেছেন। জান্নাত দিয়ে আখেরাতে তাদেরকে সম্মানিত করবেন।
العَفُوُ
আল আফুউ) ক্ষমাকারী, তিনি বান্দার গুনাহ মিটিয়ে দেন তাকে ক্ষমা করে দেন, অপরাধ করে শাস্তিযোগ্য হওয়া সত্বেও তিনি শাস্তি দেন না।
الغَفُوْرُ
(আল গাফূর) মহাক্ষমাশীল, তিনি বান্দার অন্যায় গোপন রাখেন, তাকে লাঞ্ছিত করেন না এবং শাস্তিও দেন না।
الْغَفَّارُ
(আল গাফফার) অত্যধিক ক্ষমাকারী, গুনাহগার বান্দা ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন।
الرَّءُوفُ
( আর  রাউফ) অতিব দয়ালু, রহমত বা দয়ার সাধারণ অর্থের তুলনায় এ শব্দটি অধিক ও ব্যাপক অর্থবোধক তাঁর এই দয়া দুনিয়াতে সৃষ্টির সকলের জন্যে এবং আখেরাতে কতিপয় মানুষের জন্যে। আর তারা হচ্ছে আল্লাহর বন্ধু মুমিনগণ।
الحَلِيمُ
(আল হালীম) মহাসহিষ্ণু, তিনি বান্দাদেরকে তাৎক্ষণিক শাস্তি দেন না; অথচ তিনি শাস্তি দিতে সক্ষম। বরং তারা মাফ চাইলে তিনি তাদেরকে মাফ করে দেন।
التَّوَّابُ
(আত তাওয়াব) তওবা কবূলকারী, তিনি বান্দাদের মধ্যে যাকে চান তওবা করার তাওফীক দেন এবং তাদের তওবা কবূল করেন।
السِّتِّيْرُ
(আস সিত্তীর)[1] দোষ-ত্রুটি গোপনকারী, তিনি বান্দার অন্যায় গোপন রাখেন, সৃষ্টিকুলের সামনে তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন না। তিনি ভালবাসেন বান্দা নিজের এবং অন্যের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখুক, তাহলে তিনিও তাদের অপরাধ গোপন রাখবেন।
الغَنِيُّ
(আল গানী) ঐশ্বর্যশালী, তিনি সৃষ্টিকুলের কারো মুখাপেক্ষী নন। কেননা তিনি নিজে পরিপূর্ণ, তাঁর গুণাবলী পরিপূর্ণ। সৃষ্টির সকলেই ফকীর, অনুগ্রহ ও সাহায্যের জন্যে তাঁর উপর নির্ভরশীল।
الكَرِيمُ
(আল কারীম) মহা অনুগ্রহশীল, সর্বাধিক কল্যাণকারী, সুমহান দানকারী। যাকে যা চান যেভাবে ইচ্ছা দান করেন। চাইলেও দান করেন, না চাইলেও দান করেন। গুনাহ মাফ করেন, দোষ-ত্রুটি গোপন রাখেন।
الأَكْرَمُ
(আল আকরাম) সর্বাধিক সম্মানিত, সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী, তাতে তাঁর কোন দৃষ্টান্ত নেই। যাবতীয় কল্যাণ তাঁর নিকট থেকেই আসে। নিজ অনুগ্রহে মুমিনদের পুরস্কৃত করবেন। অবাধ্যদের সুযোগ দেন, ন্যায়নিষ্ঠার সাথে তাদের হিসাব নিবেন।
الْوَهَّابُ
(আল ওয়াহহাব) মহান দাতা, বিনিময় ব্যতীত বিনা উদ্দেশ্যেই অত্যধিক দান করেন। না চাইতেও অনুগ্রহ করেন।
الْجَوَادُ
(আল  জাওয়াদ) উদার দানশীল, সৃষ্টিকুলকে উদারভাবে অধিক দান ও অনুগ্রহ করেন। তাঁর উদারতা ও অনুগ্রহ বিশেষভাবে মুমিনদের প্রতি বেশী হয়ে থাকে।
الْوَدُودُ
(আল ওয়াদূদ) মহত্তম বন্ধু, তিনি তাঁর মুমিন বন্ধুদের ভালবাসেন, মাগফিরাত ও নেয়ামত দিয়ে তিনি তাদের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করেন। তিনি তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হন এবং তাদের আমল কবূল করেন। তাদেরকে পৃথিবীবাসীর কাছেও ভালবাসার পাত্র করেন।
الْمُعْطِي
(আল মু’তী) দানকারী, তাঁর অফুরন্ত ভান্ডার থেকে সৃষ্টিকুলের যাকে চান যা চান প্রদান করেন। তাঁর দানের শ্রেষ্ঠাংশ তাঁর (মুমিন) বন্ধুদের জন্যে হয়ে থাকে। তিনিই সকল বস্তু সৃষ্টি করেছেন ও তাতে আকৃতি প্রদান করেছেন।
الوَاسِعُ
(আল ওয়াসি’) মহা প্রশস্ত, তাঁর গুণাবলী সুপ্রশস্ত। কেউ যথাযথভাবে তাঁর গুণগান গাইতে পারবে না। তাঁর মহত্ব ও রাজত্ব সুবিশাল প্রশস্ত। তাঁর মাগফিরাত ও করুণা সুপ্রশস্ত। দয়া ও অনুগ্রহ সুপ্রশস্ত।
الْمُحْسِِنُ
(আল মুহসিন) মহা অনুগ্রহকারী, তিনি স্বীয় সত্বা, গুণাবলী ও কর্মে অতি উত্তম। তিনি সুন্দরভাবে সকল বস্তু সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টিকুলের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন।
الرازقُ
(আর রাযিক) রিযিকদাতা, তিনি সৃষ্টিকুলের সকলকে রিযিক দিয়ে থাকেন। তিনি জগত সৃষ্টির পূর্বে তাদের রিযিক নির্ধারণ করেছেন। আর পরিপূর্ণরূপে সেই রিযিক তাদের প্রদান করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
الرَّزَّاقُ
(আর রাযযাক) সর্বাধিক রিযিকদাতা, তিনি সৃষ্টিকুলকে অধিকহারে রিযিক দিয়ে থাকেন। তাঁর কাছে প্রার্থনা না করতেই তিনি রিযিকের ব্যবস্থা করেন। এমনকি অবাধ্যদেরকেও তিনি রিযিক দিয়ে থাকেন।
اللَطِيْفُ
(আল লাত্বীফ) সুক্ষ্ণদর্শী, সকল বিষয়ের সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ জ্ঞান আছে তাঁর কাছে। কোন কিছুই গোপন থাকেনা তাঁর নিকট। তিনি বান্দাদের নিকট এত গোপনীয়ভাবে কল্যাণ ও উপকার পৌঁছিয়ে থাকেন যে তারা ধারণাই করতে পারে না।
الخَبيْرُ
(আল খাবীর) মহাসংবাদ রক্ষক, তিনি যেমন সকল বস্তুর প্রকাশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখেন, অনুরূপভাবে তাঁর জ্ঞান সবকিছুর গোপন ও অপকাশ্য সংবাদকেও বেষ্টন করে আছে।
الْفَتَّاحُ
(আল ফাত্তাহ) উন্মোচনকারী, তিনি তাঁর রাজত্বের ভান্ডার এবং করুণা ও রিযিক থেকে যা ইচ্ছা বান্দাদের জন্যে খুলে দেন। তাঁর জ্ঞান ও হিকমত অনুযায়ীই তিনি তা উন্মুক্ত করে থাকেন।
العَلِيمُ
(আল আ’লীম) মহাজ্ঞানী, তাঁর জ্ঞান বেষ্টন করে আছে যাহের-বাতেন, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের যাবতীয় বিষয়কে। কোন কিছুই তাঁর কাছে গোপন বা লুকায়িত নয়।
البَرُّ
(আল বার) মহাকল্যাণদাতা, তিনি সৃষ্টিকুলকে প্রশস্ত কল্যাণদানকারী। তিনি প্রদান করেন কিন্তু তাঁর দানকে কেউ গণনা করতে পারে না। তিনি নিজ অঙ্গীকারে সত্যবাদী। তিনি বান্দাকে ক্ষমা করেন, তাকে সাহায্য করেন ও রক্ষা করেন। তিনি বান্দার অল্পদানও গ্রহণ করেন এবং তার ছওয়াবকে বৃদ্ধি করতে থাকেন।
الحَكِيْمُ
(আল হাকীম) মহাবিজ্ঞ, তিনি নিজ জ্ঞানে সকল বস্তুকে উপযুক্তভাবে স্থাপন করেন। তাঁর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় কোন ত্রুটি হয় না ভুল হয় না।
الْحَكَمُ
(আল হাকাম) মহাবিচারক, তিনি ন্যায়নিষ্ঠার সাথে সৃষ্টিকুলের বিচার করবেন। কারো প্রতি অত্যাচার করবেন না। তিনিই সম্মানিত কিতাব (সংবিধান) নাযিল করেছেন, যাতে করে উক্ত সংবিধান অনুযায়ী মানুষের মাঝে বিচার কার্য সম্পাদন করা যায়।
الشَّاكِرُ
(আশ শাকির) কৃতজ্ঞতাকারী, যে বান্দা তাঁর আনুগত্য করে ও তাঁর গুণগান গায় তিনি তার প্রশংসা করেন। আমল যত কম হোক না কেন তিনি তাতে প্রতিদান দেন। যারা তাঁর নেয়ামতের শুকরিয়া করে বিনিময়ে তাদের নেয়ামতকে দুনিয়াতে আরো বৃদ্ধি করে দেন এবং পরকালে প্রতিদান বৃদ্ধি করবেন।
الشَّكُورُ
(আশ শাকুর) কৃতজ্ঞতাপ্রিয়, বান্দার সামান্য আমল তাঁর কাছে পবিত্রময়। তিনি তাতে বহুগুণ ছওয়াব প্রদান করেন। বান্দার প্রতি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা করার অর্থ হচ্ছে তার কর্মের প্রতিদান দেয়া এবং আনুগত্য গ্রহণ করা।
الجَمِيْلُ
(আল জামীল) অতিব সুন্দর, তিনি নিজ সত্বা, নাম ও গুণাবলীতে এবং কর্মে অতিব সুন্দর। সৃষ্টির যে কোন সৌন্দর্য তাঁর পক্ষ থেকেই প্রদত্ত।
الْمَجِيدُ
(আল মাজীদ) মহাগৌরবান্বিত সপ্তাকাশে ও পৃথিবীতে গর্ব ও অহংকার, সম্মান ও মর্যাদা এবং উচ্চতা ও শ্রেষ্ঠত্ব একমাত্র তাঁরই।
الْوَلِيُّ
(আল ওয়ালী) মহা অভিভাবক, তিনি সৃষ্টি জগতের প্রতিটি বিষয়ের পরিচালনাকারী, রাজত্বে কর্তৃত্বকারী। তিনিই তাঁর মুমিন বন্ধুদের সাহায্যকারী, মদদকারী ও রক্ষাকারী।
الْحَمِيدُ
(আল হামীদ) মহাপ্রশংসিত, তিনি নিজ নাম, গুণাবলী ও কর্মে সর্বোচ্চ প্রশংসিত। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ও সচ্ছলতা-অভাবে তাঁরই প্রশংসা। তিনিই সকল প্রশংসা ও স্তুতির হকদার। কেননা তিনি সকল পরিপূর্ণ গুণাবলীর অধিকারী।
المَوْلَى
(আল মাওলা) অভিভাবক, তিনি পালনকর্তা, বাদশা, নেতা। তিনি তাঁর মুমিন বন্ধুদের সাহায্য ও সহযোগিতাকারী।
النَّصِيْرُ
(আন নাসীর) সাহায্যকারী, তিনি যাকে ইচ্ছা নিজ সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করেন। তিনি যাকে মদদ করেন তাকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। তিনি যাকে লাঞ্ছিত করেন তাকে কেউ সাহায্য করতে পারে না।
السَّمِيعُ
মহাশ্রবণকারী, তাঁর শ্রবণ প্রত্যেক গোপনীয় সলা-পরামর্শকে বেষ্টন করে, প্রত্যেক প্রকাশ্য বিষয়কে বেষ্টন করে; বরং সকল আওয়াজকে বেষ্টন করে তা যতই উঁচু হোক অথবা নীচু বা ক্ষীণ হোক।
البَصِيرُ
(আল বাসীর) মহাদ্রষ্টা, তাঁর দৃষ্টি জগতের সকল কিছুকে বেষ্টন করে আছে। দৃশ্য-অদৃশ্য সকল কিছুই তিনি দেখতে পান। যতই গোপন বা প্রকাশ্য হোক না কেন অথবা ক্ষুদ্র ও বৃহৎ হোক না কেন তাঁর অগোচরে কিছুই থাকে না।
الشَّهِيدُ
(আশ শাহীদ) মহাস্বাক্ষী, তিনি সৃষ্টিকুলের পর্যবেক্ষক। তিনি নিজের একত্ববাদ ও ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠার স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। মুমিনগণ তাঁর একত্ববাদ ঘোষণা করলে তিনি তাদের স্বাক্ষী হন। তিনি তাঁর রাসূলগণ এবং ফেরেশতাদের জন্যেও স্বাক্ষী|
الرَّقِيبُ
(আর রাক্বীব) মহাপর্যবেক্ষক, তিনি সৃষ্টিকুলের সবকিছুই জানেন। তিনি তাদের কর্ম সমূহ গণনা করে রাখেন। কারো চোখের পলক বা অন্তরের গোপন বাসনা তাঁর জ্ঞান বহির্ভূত নয়।
الرَّفِيْقُ
(আর রাফীক্ব) মহান বন্ধু, দয়ালু, তিনি নিজের কর্মে খুব বেশী নম্রতা অবলম্বন করেন। তিনি সৃষ্টি ও নির্দেশের বিষয় ক্রমান্বয়েও ধীরস্থীরভাবে সম্পন্ন করেন। তিনি বান্দাদের সাথে কোমল ও দয়ালু আচরণ করেন। সাধ্যের বাইরে তাদের উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেন না। তিনি নম্র-ভদ্র বান্দাকে ভালবাসেন।
القَرِيْبُ
(আল ক্বরীব) সর্বাধিক নিকটবর্তী, তিনি জ্ঞান ও ক্ষমতার মাধ্যমে সকল সৃষ্টির নিকটবর্তী। সাহায্য ও দয়ার মাধ্যমে মুমিন বন্দাদের নিকটবর্তী। সেই সাথে তিনি সপ্তাকাশের উপর সুমহান আরশে সমুন্নত। তিনি  স্বসত্বায় মাখলুকের সাথে মিশে থাকেন না।
المُجِيبُ
(আল মুজীব) কবূলকারী, আহবানে সাড়াদানকারী, তিনি আহবানকারীর আহবানে এবং প্রার্থনকারীর প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে থাকেন। তাঁর জ্ঞান ও হিকমত অনুযায়ীই তিনি সাড়া দিয়ে থাকেন।
الْمُقِيْتُ
(আল মুক্বীত) ভরণ-পোষণ দানকারী, খাদ্যদাতা, তিনি রিযিক ও খাদ্য সৃষ্টি করেছেন এবং তা মাখলুকের কাছে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্বও নিয়েছেন। তিনি বান্দার রিযিক ও আমল লোকসান ও ত্রুটি ছাড়াই সংরক্ষণ করেন।
الْحَسِيبُ
(আল হাসীব) মহান হিসাব রক্ষক, যথেষ্ট, বান্দার দ্বীন-দুনিয়ার যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের জন্যে তিনিই যথেষ্ট। তাঁর যথেষ্টতার শ্রেষ্ঠাংশ মুমিনদের জন্যে নির্ধারিত। মানুষ দুনিয়ায় যে আমল সম্পাদন করেছে তিনি তার হিসাব নিবেন।
المُؤْمِنُ
(আল মু’মিন) নিরাপত্তাদানকারী, বিশ্বাসী, নবী-রাসূল এবং তাঁদের অনুসারীদের সত্যতার সাক্ষী দিয়ে তিনি তাদের সত্যায়ন করেছেন। তাঁদের সত্যতাকে বাস্তবায়ন করার জন্যে যে দলীল-প্রমাণ দিয়েছেন তার সত্যায়ন করেছেন। দুনিয়া-আখেরাতের সকল নিরাপত্তা তাঁরই দান। মুমিনদের নিরাপত্তা দিয়েছেন যে, তিনি তাদের প্রতি যুলুম করবেন না, তাদেরকে শাস্তি দিবেন না এবং কিয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় তাদেরকে বিপদে ফেলবেন না।
الْمَنَّانُ
(আল মান্নান) অনুগ্রহকারী, দানকারী, তিনি অঢেল দান করেন, বড় বড় নেয়ামত প্রদান করেন। সৃষ্টির উপর পরিপূর্ণরূপে অনুগ্রহ করেন।
الطَّيِّبُ
(আত ত্বইয়েব) মহা পবিত্র, তিনি অতি পবিত্র, যাবতীয় দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। যাবতীয় সৌন্দর্য, শ্রেষ্ঠত্ব ও পরিপূর্ণতা তাঁরই। তিনি সৃষ্টিকুলকে অফুরন্ত কল্যাণ প্রদান করেন। আমল ও দান-সাদকা একনিষ্ঠভাবে তাঁর উদ্দেশ্যে না হলে এবং হালাল ও পবিত্র উপার্জন থেকে না হলে তিনি তা কবূল করবেন না।
الشَّافِي
(আশ শাফী) আরোগ্য দানকারী, তিনি অন্তর ও অঙ্গ-প্রতঙ্গের যাবতীয় ব্যাধির আরোগ্য দানকারী। আল্লাহ্‌ যা দিয়েছেন তা ব্যতীত বান্দার হাতে কোন নিরাময়ক উপকরণ নেই। আরোগ্য বা রোগমুক্তির ক্ষমতা একমাত্র তাঁর হাতেই আছে।
الْحَفِيظُ
(আল হাফীয) মহারক্ষক, তিনি নিজ অনুগ্রহে মুমিন বান্দার আমল সমূহ হেফাযত ও সংরক্ষণ করে থাকেন। তাঁর অসীম ক্ষমতা দ্বারা মাখলুকাতকে লালন-পালন করেন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করেন।
الْوَكِيلُ
(আল ওয়াকীল) মহা প্রতিনিধি, তিনি সমস্ত জগতের দায়িত্ব নিয়েছেন, সৃষ্টি ও পরিচালনার কর্তব্যভার গ্রহণ করেছেন। অতএব সৃষ্টিকুলকে অস্তিত্ব প্রদান ও মদদ করার তিনিই যিম্মাদার।
الْخَلاَّقُ
(আল খাল্লাক্ব) সৃষ্টিকারী, আল্লাহ্‌ তাআলা যে অগণিত বস্তু সৃষ্টি করেন শব্দটি তার অর্থই বহণ করছে। তিনি সৃষ্টি করতেই আছেন এবং সৃষ্টি করার এই বিশাল ক্ষমতা তাঁর মধ্যে চিরকালীন।
الخَالِقُ
(আল খালিক্ব) স্রষ্টা, তিনি পূর্ব দৃষ্টান্ত ছাড়াই মাখলুকাতকে সৃষ্টি করেছেন।
البَارِئُ
(আল বারী) সৃজনকর্তা, তিনি যা নির্ধারণ করেছেন এবং যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে রূপ দান করেছেন।
المُصَوِّرُ
(আল মুসাব্বির) অবয়বদানকারী, আল্লাহ্‌ তা’আলা নিজের প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও করুণা অনুযায়ী সৃষ্টিকুলকে ইচ্ছামত আকৃতি ও অবয়ব দান করেছেন।
الرَّبُّ
(আর রব) প্রভু, প্রতিপালক, তিনিই সৃষ্টিকুলকে তাঁর নেয়ামতরাজী দিয়ে প্রতিপালন করেন, তাদেরকে ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন। তিনি মুমিন বন্ধুদের অন্তর যেভাবে সংশোধন হয় সেভাবে যত্নসহকারে লালন-পালন করেন। তিনিই মালিক, স্রষ্টা, নেতা ও পরিচালক।
العَظِيمُ
(আল আযীম) সুমহান, তিনি নিজ সত্বা, নাম ও গুণাবলীতে সুমহান গৌরবান্বিত। তাই সৃষ্টিকুলের আবশ্যক হচ্ছে তাঁর মহত্ব ঘোষণা করা, তাঁকে সম্মান করা এবং তাঁর আদেশ-নিষেধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তা মেনে চলা।
القَاهِرُ/القَهَّارُ
(আল কাহির/আল কাহ্হার) পরাজিতকারী, অসীম ক্ষমতাবান, তিনি বান্দাদেরকে বাধ্যকারী, সৃষ্টিকুলেকে তাঁর দাসে পরিণতকারী, সকলের উপর সর্বোচ্চ। তিনিই বিজয়ী, তাঁর জন্যেই সকল মস্তক নত হয়, সব মুখমন্ডল অবনমিত হয়।
المُهَيْمِنُ
(আল মুহাইমিন) রক্ষক, কর্তৃত্বকারী, তিনি সকল বস্তুকে পরিচালনাকারী, সংরক্ষণকারী, সাক্ষী এবং সব কিছুকে বেষ্টনকারী।
العَزِيزُ
(আল আযীয) মহাপরাক্রমশালী, ক্ষমতা ও শক্তির যাবতীয় বিষয় তাঁরই অধিকারে। তিনি প্রতাপশালী- তাঁকে কেউ পারজিত করতে পারে না। তিনি বাধাদানকারী- তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, কর্তৃত্ব ও বিজয় তাঁর হাতেই- তাঁর অনুমতি ছাড়া কোন কিছুই নড়তে পারে না।
الجَبَّارُ
(আল জাব্বার) মহাশক্তিধর, তিনি যা চান তাই হয়, সৃষ্টিকুল তাঁর কাছে পরাজিত, তাঁর মহত্বের কাছে অবনমিত, তাঁর হুকুমের গোলাম। তিনি ব্যাথাতুর ভগ্নের সহায়তা করেন, অভাবীকে স্বচ্ছল করেন, কঠিনকে সহজ করেন, অসুস্থ ও বিপদাপন্নকে উদ্ধার করেন।
المُتَكَبِّرُ
(আল মুতাকাব্বির) মহাগৌরবান্বিাত তিনি মহান, সকল দোষ-ত্রুটির উর্ধ্বে। তিনি বান্দাদের প্রতি অত্যাচারের অনেক উর্ধ্বে। সৃষ্টির অবাধ্যদেরকে পরাজিতকারী। গর্ব-অহংকারের একক অধিকারী তিনিই।
الكَبيرُ
(আল কাবীর) অতীব মহান, তিনি নিজ সত্বা, গুণাবলী ও কর্মে অতিব মহান ও বড়। তাঁর চেয়ে বড় কোন বস্তু নেই। তাঁর মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের সামনে সব কিছুই ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ।
الحَيـِِيُّ
(আল হায়িই) লজ্জাশীল, তাঁর সম্মানিত সত্বা ও বিশাল রাজত্বের সাথে সামঞ্জস্যশীল পন্থায় তিনি লজ্জা করেন। আল্লাহর লজ্জা হচ্ছে তাঁর দান, করুণা, উদারতা ও সম্মান।
الحَيُّ
(আল হাই) চিরঞ্জীব, তিনি চিরকাল পরিপূর্ণরূপে জীবিত। তিনি এভাবেই ছিলেন ও আছেন এবং থাকবেন। তাঁর শুরু নেই বা শেষ নেই। জগতে প্রাণের যে অস্তিত্ব তা তাঁরই দান।
القَيُّومُ
(আল কাইয়ূম) চিরস্থায়ী, তিনি নিজে নিজেই প্রতিষ্ঠিত, তিনি সৃষ্টিকুলের কারো মুখাপেক্ষী নন। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে তার সবকিছুই তাঁর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। সবাই তাঁর দরবারের ভিক্ষুক।
الْوَارِثُ
(আল ওয়ারিস) উত্তরাধিকারী, সৃষ্টিকুল ধ্বংস হওয়ার পর তিনিই থাকবেন, প্রত্যেক বস্তুর মালিক ধ্বংস হওয়ার পর তা তাঁর কাছেই ফিরে যাবে। আমাদের কাছে যা কিছু আছে তা আমানত স্বরপ আল্লাহ্‌ দিয়েছেন। এগুলো সবই প্রকৃত মালিক আল্লাহর কাছে একদিন ফিরে যাবে।
الدَّيْانُ
(আদ দাইয়ান) মহাবিচারক, তিনি সেই সত্বা সৃষ্টিকুল যাঁর অনুগত ও অবনমিত। তিনি বান্দাদের কর্মের বিচার করবেন। ভাল কর্মে বহুগুণ প্রতিদান দিবেন। মন্দ কর্মে শাস্তি দিবেন অথবা তা ক্ষমা করে দিবেন।
المَلِكُ
(আল মালিক) মহান মালিক, বাদশা, আদেশ-নিষেধ ও কর্তৃত্বের অধিকারী তিনিই। তিনি আদেশ ও কর্মের মাধ্যমে সৃষ্টিকুলকে পরিচালনাকারী। তাঁর রাজত্ব ও পরিচালনায় তাঁর কোন শরীক নেই।
الْمَالِكُ
আল (মালিক) মহান মালিক, তিনি মূলে সব কিছুর মালিক এবং মালিকানার যোগ্যও একমাত্র তিনিই। জগত পয়দা করার সময় তিনিই মালিক, তিনি ব্যতীত কেউ ছিলনা। সবশেষে সৃষ্টিকুল ধ্বংস হওয়ার পরও মালিকানা তাঁরই।
الْمَلِيْكُ
(আল মালীক) মহান বাদশা, ব্যাপকভাবে মালিকানা ও কর্তৃত্ব তাঁরই।
السُّبُّوْحُ
(আস সুব্বূহ) মহামহিম, পূতপবিত্র, তিনি সকল দোষ-ত্রুটি থেকে পবিত্র। কেননা পরিপূর্ণতা, শ্রেষ্ঠত্ব ও সৌন্দর্যের যাবতীয় গুণাবলী তাঁরই।
القُدُّوسُ
(আল ক্বুদ্দূস) মহা পবিত্র, তিনি সবধরণের ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও নিঃষ্কলুষ। কারণ পূর্ণতা বলতে যা বুঝায় এককভাবে তিনিই তার উপযুক্ত, তাঁর কোন দৃষ্টান্ত নেই।
السَّلامُ
(আস সালাম) পরম শান্তিদাতা, তিনি স্বীয় সত্বা, নাম, গুণাবলী ও কর্মে যে কোন ধরণের দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় শান্তি-শৃংখলা একমাত্র তাঁর নিকট থেকেই পাওয়া যায়।
الحَقُّ
(আল হাক্ক) মহাসত্য, তাঁর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই সংশয় নেই- না তাঁর নাম ও গুণাবলীতে না তাঁর উলুহিয়্যাতে। তিনিই সত্য মা’বূদ- তিনি ব্যতীত কোন মা’বূদ সত্য নয়।
المُبيْنُ
(আল মুবীন) সুস্পষ্টকারী, প্রকাশকারী, তাঁর একত্ববাদ, হিকমত ও রহমতের প্রতিটি বিষয় প্রকাশ্য। তিনি বান্দাদেরকে কল্যাণ ও হেদায়াতের পথ পরিস্কার বাতলিয়ে দিয়েছেন, যাতে তারা তার অনুসরণ করে এবং বিভ্রান্তি ও ধ্বংসের পথও সুস্পষ্ট বর্ণনা করেছেন, যাতে তারা সতর্ক থাকতে পারে।
القَويُّ
(আল ক্বাবী)মহা শক্তিধর, তিনি পরিপূর্ণ ইচ্ছা-স্বাধিনতার সাথে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী।
المَتِيْنُ
(আল মাতীন) দৃঢ়শক্তির অধিকারী, তিনি নিজ ক্ষমতা ও শক্তিতে অত্যন্ত কঠোর। কোন কাজে কষ্ট-ক্লেশ বা ক্লান্তি তাঁকে আচ্ছন্ন করে না।
الْقَادِرُ
(আল ক্বাদির) সর্বশক্তিমান, তিনি সকল বস্তুর উপর শক্তিমান, কোন কিছুই তাঁকে আপরাগ করতে পারে না- না যমীনে না আসমানে। তিনিই সব কিছু নির্ধারণ করেছেন।
القَدِيْرُ
(আল ক্বাদীর) মহাপ্রতাপশালী, এ শব্দটির অর্থ পূর্বের শব্দটিরই অনুরূপ। কিন্তু আল্‌ কাদীর শব্দটির মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা অধিক হয়।
الْمُقْتَدِرُ
(আল মুক্তাদির) মহা ক্ষমতাবান, আল্লাহর পূর্ব জ্ঞান অনুযায়ী নির্ধারণকৃত বস্তু বাস্তবায়নে ও সৃষ্টি করতে তাঁর অতিরিক্ত ক্ষমতা আছে।
العليُّ الأَعْلَى
(আল আলিউল আ’লা) সুউচ্চ, মহান, মহত্তর, সর্বোচ্চ, তিনি মর্যাদা, ক্ষমতা ও সত্বা তথা সকল দিক থেকে সর্বোচ্চ। সব কিছুই তাঁর রাজত্ব ও ক্ষমতার অধিনে। তাঁর উপরে কখনোই কিছু নেই।
المُتَعَالُ
(আল মু’তাল) চিরউন্নত, তাঁর উচ্চতা ও মহত্বের সামনে সকল বস্তু অবনমিত। তাঁর উপরে কিছু নেই। সকল বস্তু তাঁর নীচে ও অধীনে, তাঁর ক্ষমতা ও রাজত্বের বলয়ে।
الْمُقَدِّمُ
(আল মুক্বাদ্দিম) অগ্রসরকারী, তিনি নিজের ইচ্ছা ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী সকল বস্তুকে বিন্যস্ত করেছেন ও স্বস্থানে রেখেছেন। তাঁর জ্ঞান ও অনুগ্রহের ভিত্তিতে সৃষ্টির কাউকে কারো উপর প্রাধান্য দিয়েছেন।
الْمُؤَخِّرُ
(আল মুআখখির) পশ্চাতে প্রেরণকারী, তিনি প্রতিটি বস্তুকে নিজের হিকমত অনুযায়ী যেভাবে ইচ্ছা স্থাপন করেন, যাকে ইচ্ছা অগ্রসর করেন, যাকে ইচ্ছা পশ্চাতে রাখেন। পাপী বান্দাদেরকে শাস্তি দিতে দেরী করেন, যাতে তারা তাওবা করতে পারে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে পারে।
الْمُسَعِّرُ
(আল মুসায়্যি’র)[2] মূল্য নির্ধারণকারী, তিনি নিজের প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের দাবী অনুযায়ী বিভিন্ন বস্তুর মূল্য, মর্যাদা, গুরুত্ব  ও প্রভাবকে বৃদ্ধি করেন অথবা হ্রাস করেন। ফলে উহা মূল্যবান (মহার্ঘ) হয় অথবা সস্তা হয়।
الْقَابِضُ
(আল কাবিয) কবজকারী, সংকুচনকারী, তিনিই প্রাণীকুলের জান কবজ করেন। তিনি নিজের হিকমত ও ক্ষমতা বলে সৃষ্টিকুলের মধ্যে যার ইচ্ছা রিযিক সংকুচন ও হ্রাস করেন- তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্যে।
الْبَاسِطُ
(আল বাসিত্ব) সমপ্রসারণকারী, তিনি তাঁর উদারতা ও করুণায় বান্দাদের রিযিক প্রশস্ত করেন। অতঃপর তাঁর হিকমত অনুযায়ী তা দ্বারা তাদের পরীক্ষা করেন। তিনি গুনাহগারদের তাওবা কবূল করার জন্যে দু’হস্ত প্রসারিত করেন।
الأَوَّلُ
(আল আওয়াল) অনাদী, তিনি সেই সত্বা যাঁর পূর্বে কিছুই ছিল না। তিনি সৃষ্টি করেছেন বলেই মাখলুক অস্তিত্ব লাভ করেছে। কিন্তু তাঁর অস্তিত্বের কোন শুরু নেই।
الآخِرُ
(আল আখির) অনন্ত, তাঁর পর কোন কিছু নেই। তিনিই অনন্ত, চিরকালীন ও অবিশষ্ট। পৃথিবীর সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে; অতঃপর প্রত্যাবর্তন করবে তাঁর কাছেই। কিন্তু তাঁর অস্তিত্বের শেষ নেই।
الظَّاهِرُ
(আয যাহির) প্রকাশ্য, তিনি সবকিছুর উপরে সুউচ্চ। তাঁর উচ্ছে কিছু নেই। তিনি সকল বস্তুকে করায়ত্বকারী ও বেষ্টনকারী।
البَاطِنُ
(আল বাত্বিন) গোপন, তাঁর পরে কোন কিছু নেই। তিনি দুনিয়াতে মাখলুকের দৃষ্টির আড়ালে থাকেন; তারপরও তিনি তাদের নিকটবর্তী ও তাদেরকে বেষ্টনকারী।
الوِتْرُ
(আল বিতর) বেজোড় বা একক, তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি অদ্বিতীয় তাঁর কোন নযীর নেই।
السَّيِّدُ
(আস সাইয়েদ) প্রভু, নেতা, মানুষের অভাব পুরণকারী, সৃষ্টিকুলের একক নেতৃত্ব তাঁর হাতেই। তিনি তাদের মালিক ও পালনকর্তা। সবকিছু তাঁর সৃষ্টি ও দাস।
الصَّمَدُ
(আস সামাদ) অমুখাপেক্ষী, স্বয়ং সম্পূর্ণ, তিনি নিজের নেতৃত্বে   স্বয়ং সম্পূর্ণ,  | মাখলুকাত যাবতীয় প্রয়োজনে তাঁরই স্মরণাপন্ন হয়। কেননা তারা তাঁর কাছে বড়ই নি:স্ব তিনি সবার আহার যোগান; তাকে কেউ আহার দেয় না, তাঁর আহারের কোন দরকার নেই।
الوَاحِدُ الأَحَدُ
(আল ওয়াহিদুল আহাদ) একক, অদ্বীতিয়, সকল ক্ষেত্রে পরিপূর্ণতায় তিনিই একক ও অদ্বিতীয়; তাঁর কোন অংশী নেই। তাঁর অনুরূপ কোন কিছু নেই। এই গুণাবলী এককভাবে তাঁরই ইবাদতকে আবশ্যক করছে। তাঁর কোন শরীক নেই।
الإِلَهُ
(আল ইলাহ) মা’বূদ বা উপাস্য, তিনিই সত্য মাবূদ। এককভাবে তিনি যাবতীয় ইবাদত ও দাসত্ব পাওয়ার হকদার; অন্য কেউ নয়।
সংকলনে: শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফী
জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার
সৌদী আরব।

Friday, March 4, 2016

মহান আল্লাহর ৯৯ নামের বাহিরে ডাকা যাবে না সূরা ইসরার ১১০ নম্বর আয়াতে সূরা হাশর

আল্লাহ খোদা নামে ডাকা যাবে কি না?
পবিত্র কোরআনের সূরা ইসরার ১১০ নম্বর আয়াতে ও সূরা হাশরে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘খোদা’ বলে আল্লাহকে ডাকা শিরক। মোট কথা আল্লাহর দেয়া গুনবাচক নাম ব্যাতিত অন্য কোন নামে তাকে ডাকা শিরক। [সুরা ইসরা:১১০, হাশর] অর্থ্যাৎ আল্লাহ পাক স্পষ্ট করে বলেছেন যে, যারা ‘খোদা’ বলে আল্লাহকে ডাকবে তারা শিরককারী। আর শিরককারীর স্থান জাহান্নামে। সুতারাং এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত, যে আমরা আর কখনো আল্লাহকে তার ৯৯টি নাম ছাড়া অন্য কোন নামে যেন না ডাকি।  কেননা আসমায়ে হুসনার মাঝে এ শব্দগুলোর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না এবং ভগবান, ঈশ্বর, গড ও খোদাশব্দের স্ত্রীবাচক শব্দও রয়েছে।
মহান আল্লাহ তায়ালার 99 নামের কোন শব্দ অর্থ-খোদা নামে আল্লাহকে ডাকা যাবে না[খোদা ডাকা শিরক]
কুরাআন ও হাদীস-দেখেন। সুরা ইসরা:১১০, হাশর] অর্থ্যাৎ আল্লাহ পাক স্পষ্ট করে বলেছেন যে, যারা 'খোদা' বলে আল্লাহকে ডাকবে তারা শিরককারী। আর শিরককারীর স্থান জাহান্নামে।আমার কথা না বুঝে মন্তব্য করবেন না দয়া করে।


ফার্সি শব্দ:-খোদ + আ = খোদা ≠ আল্লাহ “খোদা” একটি ফার্সি শব্দ যার সন্ধি বিচ্ছেদ হচ্ছে খোদ+আ। “খোদ” মানে নিজে, “আ” মানে এসেছে। সুতরাং, খোদা মানে- যে নিজে নিজেই এসেছে। আল্লাহ কি “নিজে নিজেই এসেছেন” যে তাঁকে খোদা নামে ডাকা যাবে না।
আল্লাহ কোনোক্রমেই হিন্দুদের ভগবান, খ্রিষ্টান বা পৌত্তলিকদের ঈশ্বর, ইংরেজদের গড বা ইরানিদের খোদার প্রতিশব্দ নয়। এমনকি আল্লাহ শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে এগুলোর প্রয়োগ বা প্রয়োগের কল্পনাও করা যায় না। কেননা আসমায়ে হুসনার মাঝে এ শব্দগুলোর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না এবং ভগবান, ঈশ্বর, গড ও খোদা শব্দের স্ত্রীবাচক শব্দও রয়েছে। কুরআন-হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয় এবং যেগুলো একমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য এগুলো ব্যবহার করাই এলহাদ, যা একেবারেই হারাম।







পৃথিবীতে অনেক ধর্ম এর মানুষ আছে


পৃথিবীতে অনেক ধর্ম এর মানুষ আছে
ধর্ম গুল নিদিষ্ট সময়ের নিদিষ্ট জাতির জন্যকুরআন এসেছে পৃথিবীর-সকল মানব জাতির জন্য


Tuesday, February 2, 2016

প্রবাসী ভাই দের উদ্দেশে:

প্রবাসী ভাই দের উদ্দেশে: 
জীবন-জীবিকা এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতির প্রবাস জীবনে পাড়ি জমায়,
কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়ে জীবন জিবিকা-যুদ্ধ,করে অর্থ-উপার্জন করে,
তার পর জীবনের অগ্রগতি কঠিন-বাদা হয়ে দাড়ায়,দেশে রেখে যাওয়া স্ত্রী
কিছু স্বামী যখন দেশে আসতে চায় 
স্ত্রী বলে কিসের জন্য-স্বামীত বুঝতে পারে নাই
তাই মাসে মাসে টাকা পাটায়,স্বামীত জানে না স্ত্রী অবৈধ
সম্পর্ক লিপ্ত স্বামীকে প্রয়োজন মনে করে না,
বউ-মেয়ে পরকিয়া প্রেমে...হাবু-ডুবু খাচছে অবৈধ পুরুষ ও নারীর
তাই স্বামী কে প্রয়োজন মনে করে না,অবৈধ প্রেমিকের যৌন ব্যভিচার/সঙ্গে
যৌন মিলনে জিনায় লিপ্ত হয়ে আছে-লজ্জা হীনা নারী
-{আল্লাহ যদি আপনার বিবেক দিয়ে থাকে ,মন্তব্য করার আগে Status দেখে নিবে। বিবেক বানদের জন্য,নারী সুন্দর এবং মধু সুরে কথার শুনে বিবেক যেন ও হারিয়ে না যায়। ............আল্লাহ-পরকাল যদি বিশ্বাস করেন ।
অন্যায় না কমার একটি মূল কারণ হল অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার কারনে।

প্রতিবেশীর হক সচেতনতা প্রয়োজন

নামাজ রোজা তাহাজ্জুদ পড়ে কোন কাজে আসবে না, যদি না মানও।
রাসুল (সাঃ) বলেন :
1.তোমরা যদি কোন অপরাধ হতে দেখ তবে হাত দিয়ে বাধা দাও
2.হাত দিয়ে সম্ভব না হলে মুখ দিয়ে বাধা দাও,
3.তাও সম্ভব না হলে অন্তর দ্বারা সেটাকে ঘৃণা কর। 
মহান আল্লাহ বলেন আমি তোমাদের ন্যায়,অন্যায় বোঝার ক্ষমতা দিয়েছি।

প্রতিবেশীর হক : সচেতনতা প্রয়োজন

প্রতিবেশী। মানবসমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ফলে ইসলামে প্রতিবেশীর হককে অনেক গুরুত্ব দেয়াহয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনজিবরীল (.) আমাকে প্রতিবেশীর হকেরব্যাপারে এত বেশি তাকিদ করেছেন যেআমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিবেশীকে মিরাছের অংশিদার বানিয়েদেয়া হবে। (দ্র.সহীহ বুখারী ৬০১৪;সহীহ মুসলিম ২৫২৪কিন্তু আজকাল  বিষয়ে আমাদের মাঝে চরমঅবহেলা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে শহরের মানুষের মাঝে। বছরের পর বছর পার হয় পাশের বাড়িরকারো সাথে কোনো কথা হয় নাখোঁজ খবর নেওয়া হয় নাবরং বিভিন্নভাবে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া হয়।অথচ প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ  তাকে কষ্ট না দেওয়াকে ঈমানের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনযে আল্লাহ  আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীরসাথে সদাচরণ করে। (সহীহ মুসলিমহাদীস : ১৮৫আরেক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেনযে আল্লাহ  আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। (সহীহ মুসলিম,হাদীস : ১৮৩)
প্রতিবেশী কে?
প্রতিবেশী বলতে মুসলিমকাফেরনেক বান্দা,ফাসেকবন্ধুশত্রু,পরদেশীস্বদেশীউপকারী,ক্ষতিসাধনকারীআত্মীয়অনাত্মীয়নিকটতম বা তুলনামূলক একটু দূরের প্রতিবেশী সবাই অন্তর্ভুক্ত।
আর প্রতিবেশী সাধারণত তিন শ্রেণীর হয়ে থাকে এবং তাদের হকও বিভিন্ন দিকে লক্ষ করে কম বেশী হয়েথাকে। যার এক দিক থেকে হক থাকে। সে হলঅনাত্মীয় বিধর্মী প্রতিবেশী।  ব্যক্তির হক শুধু প্রতিবেশীহওয়ার ভিত্তিতে।  যার দুই দিক থেকে হক থাকে। সে হলমুসলিম প্রতিবেশীযার সাথে আত্মীয়তারকোনো সম্পর্ক নেই।  ব্যক্তির হক প্রতিবেশী এবং মুসলিম হওয়ার দিক থেকে। যার তিন দিক থেকে হকথাকে। সে হলমুসলিম আত্মীয় প্রতিবেশী।  ব্যক্তির হক প্রতিবেশীমুসলিম  আত্মীয় হওয়ার দিক থেকে।তবে প্রত্যেক শ্রেণীই যেহেতু প্রতিবেশী তাই প্রতিবেশীর সকল হকের ক্ষেত্রে সবাই সমান হকদার। আরপ্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখাবিপদে আপদে এগিয়ে যাওয়াএকে অপরের সুখ-দুঃখের শরিক হওয়াহাদিয়াআদান প্রদান করাসেবা শুশ্রূষা করাপ্রতিবেশীর কেউ মারা গেলে সান্ত্বনা দেওয়াকাফন দাফনে শরিকহওয়াএকে অপরের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেওয়াপ্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়াপ্রতিবেশীরকষ্টের কারণ হয় এমন সব ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি সবই একজন মুমিনের স্বভাবজাতবিষয় হওয়া উচিত।
প্রতিবেশীর হক কুরআনে
আল্লাহ তাআলা আলকুরআনুল কারীমে সূরা নিসার ৩৬ নং আয়াতে আল্লাহর ইবাদাত  তার সাথে কাউকেশরিক না করা-এই বিধানের সাথে উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের হক। তার মধ্যে রয়েছে মাতাপিতার হকআত্মীয় স্বজনের হকএতীমের হক ইত্যাদি। এসব গুরুত্বপূর্ণ হকের সাথেই আল্লাহ প্রতিবেশীরহককে উল্লেখ করেছেন।  থেকেই বোঝা যায়প্রতিবেশীর হককে আল্লাহ কত গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তা রক্ষাকরা আমাদের জন্য কত জরুরি। আল্লাহ বলেছেন, (অর্থতোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং কোনো কিছুকেতার সাথে শরিক করো না। এবং পিতা-মাতাআত্মীয়-স্বজনএতীমঅভাবগ্রস্থনিকট-প্রতিবেশীদূর-প্রতিবেশীসংগী-সাথীমুসাফির  তোমাদের দাস-দাসীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর। নিশ্চয় আল্লাহদাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। 
উত্তম প্রতিবেশী কে?
 প্রশ্নের সহজ উত্তর হলযে প্রতিবেশীর সাথে ভালো আচরণ করে এবং প্রতিবেশীর সকল হক যথাযথভাবেআদায় করে। ফলে প্রতিবেশী তার উপর সন্তুষ্ট থাকে এবং আল্লাহ্ও তার উপর সন্তুষ্ট থাকেন। হযরতআব্দুল্লাহ ইবনে আম্র রাবলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ... যে স্বীয় প্রতিবেশীরদৃষ্টিতে ভালো সেই সর্বোত্তম প্রতিবেশী। (সহীহ ইবনে খুযাইমা হা২৫৩৯শুআবুল ঈমান বায়হাকীহা.৯৫৪১মুসনাদে আহমদ হা৬৫৬৬)
প্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখা ঈমানের দাবি
হযরত ইবনে আববাস রাথেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ব্যক্তি মুমিননয় যে পেটপুরে খায় অথচ তার পাশের প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে। (মুসনাদে আবু ইয়ালাহাদীস ২৬৯৯;আল আদাবুল মুফরাদহাদীস ১১২)
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়অনেক প্রতিবেশীই এমন আছেযাদের দেখে বোঝার উপায় নেই যেতারাঅভাবে দিন কাটাচ্ছে। আবার  আমার কাছে কখনো চাইবেও না।  কুরআন মাজীদে এদেরকে ‘মাহরূম’ বলাহয়েছেসূরা যারিয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,(অর্থএবং তাদের সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত  মাহরূমের(বঞ্চিতেরহক। (সূরা যারিয়াত : ১৯এক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্যনিজে থেকে তাদের খোঁজ খবর রাখা এবংদেওয়ার ক্ষেত্রে এমন পন্থা অবলম্বন করাযাতে সে লজ্জা না পায়। এজন্যইতো যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে এটাবলে দেয়া জরুরি নয় যেআমি তোমাকে যাকাত দিচ্ছিবরং ব্যক্তি যাকাতের যোগ্য কি না এটুকু জেনেনেয়াই যথেষ্ট। 
আর আমি প্রতিবেশীর প্রয়োজন পুরা করব তাহলে আল্লাহ আমার প্রয়োজন মিটিয়ে দিবেন এবং আমার সহায়হবেন। হাদীস শরীফে এসেছেযে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পুরা করে আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরা করেন। (সহীহবুখারী,হাদীস ২৪৪২সহীহ মুসলিমহাদীস ২৫৮০) &

প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ
প্রতিবেশী আমার জীবনের আবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। তার সাথে আমার আচরণ সুন্দর হবে তা কি বলে বোঝাতেহয়আর আমি যদি মুমিন হই তাহলে তো তা আমার ঈমানের দাবি। হযরত আবু শুরাইহ্ রাবলেনআমারদুই কান শ্রবণ করেছে এবং আমার দুই চক্ষু প্রত্যক্ষ করেছে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেনযে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং আখেরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকে সম্মান করে।সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় আছে ‘সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করে।
(সহীহ বুখারীহাদীস ৬০১৮সহীহ মুসলিমহাদীস ৪৮)
হাদিয়া আদান-প্রদান
প্রতিবেশীদের পরস্পরের সুসম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হাদিয়ার আদান-প্রদান খুবই কার্যকর পন্থা। এর মাধ্যমেহৃদ্যতা সৃষ্টি হয়  ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরাহাদিয়া আদান-প্রদান কর। এর মাধ্যমে তোমাদের মাঝে হৃদ্যতা সৃষ্টি হবে।’ (দ্রআল আদাবুলমুফরাদ,বুখারী হাদীস : ৫৯৪)
তরকারির ঝোল বাড়িয়ে দাও
প্রতিবেশীকে শরীক কর
এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীকে হাদিয়া দেওয়ার বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যেসামান্য জিনিস হাদিয়াদিতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। এক  হাদীসে আছেআল্লাহররাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু যর রা.- কে বলেনহে আবু যরতুমি ঝোল (তরকারি)রান্না করলে তার ঝোল বাড়িয়ে দিও এবং তোমার প্রতিবেশীকে তাতে শরিক করো। (সহীহ মুসলিম,হাদীস২৬২৫)
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদেরকে  বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেনহে মুসলিমনারীগণতোমাদের কেউ যেন প্রতিবেশীকে হাদিয়া দিতে সংকোচবোধ না করে। যদিও তা বকরীর খুরেরমত একটি নগন্য বস্ত্তও হয়। (দ্রসহীহ বুখারী ৬০১৭)
সুতরাং প্রতিবেশী নারীরাও নিজেদের মাঝে হাদিয়া আদান-প্রদান করবেন।
ভালো কিছু রান্না হলে...
আমার বাসায় ভালো কিছু রান্না হলে প্রতিবেশীকে না জানালেও রান্নার ঘ্রাণ তো তাকে জানিয়ে দেয়পাশেরবাড়িতে ভালো কিছু রান্না হচ্ছে। বড়দের কথা বাদ দিলামঘ্রাণ পেয়ে ছোটদের মনে তো আগ্রহ জাগবে তাখাওয়ার। সুতরাং তাদের দিকে লক্ষ্য রেখে ঝোল বাড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে হোক বা নিজে একটু কম খাওয়ারমাধ্যমে হোক সামান্য কিছু যদি পাঠিয়ে দিই তাহলে  ছোট্ট শিশুর মনের ইচ্ছা যেমন পুরা করা হবে তেমনিআল্লাহও খুশি হবেন। যা আমার রিযিকে বরকতের কারণ হবে ইনশাআল্লাহ। যে খাদেম খানা  তৈরি করলতাকেও খানায় শরিক করার কথা হাদীসে এসেছে। কারণ  খাবার প্রস্ত্তত করতে গিয়ে সে এর ধোঁয়া যেমনসহ্য করেছে তেমনি এর সুঘ্রাণও তার নাকে  মনে লেগেছে। সুতরাং... রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনতোমাদের খাদেম যখন তোমাদের জন্য খানা প্রস্ত্তত করে নিয়ে আসে তখন তাকে যদিসাথে বসিয়ে খাওয়াতে না- পার তাকে দু এক লোকমা হলেও দাও। (সামান্য কিছু দিয়ে হলেও তাকে এইখানায় শরিক করকারণসে- তো এই খানা প্রস্ত্তত করার কষ্ট  আগুনের তাপ সহ্য করেছে। (সহীহবুখারীহাদীস ৫৪৬০)
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়,ভালো কিছু রান্না হলে মাঝে মধ্যে কাজের বুয়ার সন্তানদের জন্য কিছু দেয়াউচিত। অনেক সময় খাবার বেঁচে যায়। হতে পারে আমার ঘরের  বেঁচে যাওয়া খাবারই কাজের বুয়ারসন্তানদের জন্য হবে ‘ঈদের খাবার আর আশা করা যায় এর বিনিময়ে আল্লাহ আমার জন্য জান্নাতেরমেহমানদারির ফয়সালা করবেন।
প্রতিবেশী যদি দরিদ্র হয়
আর প্রতিবেশী যদি দরিদ্র হয় তাহলে  বিষয়ে তার হক আরো বেশি। কারণ দরিদ্রকে খানা খাওয়ানো যেমনঅনেক সওয়াবের কাজ তেমনি দরিদ্রকে খানা না-খাওয়ানো জাহান্নামে যাওয়ার একটি বড় কারণ। কুরআনমজীদে ‘ছাকার’ নামক জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হিসেবে নামায না পড়ার বিষয়টির সাথে সাথে দরিদ্রকেখানা না খাওয়ানোও গুরুত্বসহকারে উল্লেখিত হয়েছে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, (জাহান্নামীকে জিজ্ঞেসকরা হবে) (অর্থকোন বিষয়টি তোমাদেরকে ‘ছাকার’ নামক জাহান্নামে ঠেলে দিয়েছে? (তারা উত্তরে বলবে)আমরা নামায পড়তাম না এবং দরিদ্রকে খানা খাওয়াতাম না। (সূরা মুদ্দাছ্ছির ৪২-৪৪)
নিকটতম প্রতিবেশীকে আগে হাদিয়া দিবযদিও সে বিধর্মী হয়
প্রতিবেশীর মধ্যে যেমন আছে নিকট প্রতিবেশীনিকটতম প্রতিবেশী  তুলনামূলক একটু দূরের প্রতিবেশীতেমনি আছে মুসলিম  বিধর্মী। এখন কাকে হাদিয়া দিব বা কাকে আগে দিবহযরত আয়েশা রাবলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম-আমার দুই প্রতিবেশী। এদের কাকেহাদিয়া দিবরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনযে তোমার বেশি নিকটবর্তী। (সহীহ বুখারী,
হাদীস ৬০২০)
মুজাহিদ রহবলেনএকবার আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আম্র রা.-এর কাছে ছিলাম। তার গোলাম একটিবকরীর চামড়া ছাড়াচ্ছিল। তখন তিনি বললেনতোমার  কাজ শেষ হলে সর্বপ্রথম আমাদের ইহুদীপ্রতিবেশীকে দিবে। তখন এক ব্যক্তি বললআল্লাহ আপনার এসলাহ করুন। আপনি ইহুদীকে আগে দিতেবলছেনতখন তিনি বললেন, (হাঁআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রতিবেশীর হকেরবিষয়টি এত বেশি গুরুত্ব দিয়ে বলতে শুনেছি যেআমাদের আশংকা হয়েছে বা মনে হয়েছেপ্রতিবেশীকেমিরাছের হকদার বানিয়ে দেয়া হবে। (আল আদাবুল মুফরাদবুখারী,হাদীস ১২৮শরহু মুশকিলিল আছার,তহাবী,হাদীস ২৭৯২)
প্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিব
অনেক সময় এমন হয়প্রতিবেশীর প্রয়োজনে কিছু ছাড় দিতে হয়। কিংবা নিজের কিছু ক্ষতি স্বীকার করলেপ্রতিবেশীর অনেক বড় উপকার হয় বা সে অনেক বড় সমস্যা থেকে বেঁচে যায়। তেমনি একটি বিষয় হাদীসশরীফে উদ্ধৃত হয়েছেযা মুমিনকে  বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,কোনো প্রতিবেশী যেন অপর প্রতিবেশীকে তার দেয়ালে কাঠ স্থাপন করতে বাধা না দেয়। (সহীহবুখারী,হাদীস ২৪৬৩সহীহ মুসলিম,হাদীস ১৬০৯)
আরেক হাদীসে এসেছেযে তার (মুসলিমভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে স্বয়ং আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরাকরেন। (সহীহ মুসলিম,হাদীস ২৫৮০)
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আদান প্রদান
আমাদের প্রায় সকলেরই সূরা মাউন মুখস্থ আছে। ‘মাউন’ অর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। দৈনন্দিন জীবনেআমাদের ছোট খাট অনেক জিনিসেরই প্রয়োজন হয়। কোনো বস্ত্ত হয়তো সামান্যকিন্তু তার প্রয়োজননিত্য। যেমন লবন। খুবই সামান্য জিনিসকিন্তু তা ছাড়া আমাদের চলে না। কখনও এমনও হয় দশ টাকারলবন কেনার জন্য বিশ টাকা রিক্সা ভাড়া খরচ করতে হবে বা এখন এমন সময় যে তা পাওয়া যাবে না।অথচ লবন না হলে চলবেই না। তখন আমরা পাশের বাড়ি বা প্রতিবেশীর দ্বারস্থ হই। এমন সময়  সাধারণবস্ত্তটি যদি কেউ না দেয় তাহলে নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। কোনো প্রতিবেশী যদি এমন হয় তাহলেতাকে ধিক শত ধিক। আল্লাহও তাকে ভৎর্সনা দিয়েছেন। সূরা মাউনে আল্লাহ বলেছেন, (অর্থসুতরাং দুর্ভোগসেই সালাত আদায়কারীদেরযারা তাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীনযারা লোক দেখানোর জন্য তা করে,এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোট-খাট সাহায্যদানে বিরত থাকে। (সূরা মাউন-)
হক্কে শুফ্আ
এটি প্রতিবেশীর গুরুত্বপূর্ণ একটি হক। নিজের জমি বা বাড়ি যদি কেউ বিক্রি করতে চায় তাহলে সে ব্যাপারেপার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ তাকে আগে জানাতে হবে যেআমি আমার বাড়ি বা জমিবিক্রি করতে চাই তুমি তা কিনবে কি না। যদি সে কিনতে না চায় তাহলে অন্যের কাছে বিক্রি করা যাবে।তাকে না জানিয়ে কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না। করলে সে দাবি করতে পারবে যেআমি এই জমি ক্রয়করব। এটা তার হক। কারণহতে পারে  জমিটি তার প্রয়োজন বা এমন ব্যক্তি তা ক্রয় করল যার কারণেসে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে ইত্যাদি। আর একেই শরীয়তের পরিভাষায় ‘হক্কে শুফ্আ’ বলে।
হাদীস শরীফে প্রতিবেশীর  হকটিকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেনযদি কেউ তার জমি বিক্রি করতে চায় তাহলে সে যেন তার প্রতিবেশীকে জানায়। (সুনানে ইবনেমাজাহহাদীস ২৪৯৩)
আরেক হাদীসে হযরত ইবনে আববাস রাথেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘শুফ্আ’- বিষয়ে প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে বেশি। প্রতিবেশি উপস্থিত না থাকলেও তার অপেক্ষা করতেহবে। এটা তখন যখন তাদের উভয়ের চলাচলের পথ এক হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহহা২৪৯৪জামেতিরমিযীহা১৩৬৯ ধরনের আরো অনেক হাদীসে হক্কে শুফ্আর বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।
মন্দ প্রতিবেশী থেকে আল্লাহ্র পানাহ
মন্দ প্রতিবেশী থেকে আমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। কারণ একজন মন্দ প্রতিবেশী সাধারণ জীবনযাত্রাকেব্যাহত করবে বা আমাকেও মন্দের দিকে নিয়ে যাবে।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা মন্দ প্রতিবেশী থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাও।(দ্রসুনানে নাসায়ী,হাদীস ৫৫০২শুআবুল ঈমান,বায়হাকী হা৯১০৬)
আমি হব না মন্দ প্রতিবেশী
আমি কারো জন্য মন্দ প্রতিবেশী হব না। যেমনিভাবে আমি চাই না যেআমার প্রতিবেশীটি মন্দ হোকতেমনিভাবে আমাকেও ভাবতে হবেআমিও যেন আমার প্রতিবেশীর কষ্টের কারণ না হই। হযরত নাফেইবনে  আব্দুল হারিস রাথেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনউত্তম প্রতিবেশীব্যক্তির সৌভাগ্যের কারণ... (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ১৫৩৭২আল আদাবুল মুফরাদবুখারী,হাদীস১১৬)
আখেরাতের প্রথম বাদী-বিবাদী
প্রতিবেশীর হক নষ্ট করা বা তাকে কষ্ট দেওয়া অনেক বড় অন্যায়। কখনো দুনিয়াতেই এর সাজা পেতে হয়আর আখেরাতের পাকড়াও তো আছেই। আমার অর্থবল বা জনবল আছে বলে আমি প্রতিবেশীর হক নষ্টকরে পার পেয়ে যাব এমনটি নয়। হাঁদুনিয়ার আদালত থেকে হয়ত পার পেয়ে যাবকিন্তু আখেরাতেরআদালত থেকে আমাকে কে বাঁচাবেহযরত উকবা ইবনে আমের রাথেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনকিয়ামতের দিন প্রথম বাদী-বিবাদী হবে দুই প্রতিবেশী। (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ১৭৩৭২আলমুজামুল কাবীরতবারানীহাদীস ৮৩৬প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব না
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার বিষয়টিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমানের দুর্বলতা বলে চিহ্নিতকরেছেন। কোনো ব্যক্তি মুমিন আবার প্রতিবেশীকে কষ্টও দেয় তা ভাবা যায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনআল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!! আল্লাহর শপথ সেমুমিন নয়!!! সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন,  সে কে হে আল্লাহর রাসূলরাসূ্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনযে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। (সহীহ বুখারী,
হাদীস ৬০১৬)
আরেক হাদীসে এসেছেযে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে  আখেরাতে বিশ্বাস করে সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকেকষ্ট না দেয়। (দ্রসহীহ বুখারী হা৬০১৮
কষ্ট দেওয়ার বিভিন্ন রূপ হতে পারে। যেমনজানালা দিয়ে উঁকি দেয়াচলা ফেরার ক্ষেত্রে দৃষ্টি অবনত নারাখাপ্রতিবেশীর বাসার সামনে ময়লা ফেলাজোরে ক্যাসেট বাজানোবিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় প্রতিবেশীরঘুম বা বিশ্রামের ক্ষতি করাপ্রতিবেশীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াগৃহপালিত পশুর মাধ্যমে কষ্টদেওয়া ইত্যাদি। নিজের গৃহপালিত পশু ছেড়ে দিলাম আর তা প্রতিবেশীর ফসলের ক্ষতি করল কিংবাপ্রতিবেশীর অবলা পশু এসে কিছু নষ্ট করেছে বলে আমি পশুটির কোনো  ক্ষতি করলাম বা পশুর মালিককেগালি দিলাম। এসকল ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া  ধৈর্য্য ধারণ করা উচিত। আল্লাহ এর প্রতিদান দিবেন।
প্রতিবেশী কষ্ট দিলে কী করব?
হতে পারে আমার প্রতিবেশী আমাকে কষ্ট দেয় তাই বলে কি আমিও প্রতিবেশীকে কষ্ট দিবতা হতে পারে না।মুমিন তো সর্বদা ভালো আচরণ করে। মুমিনের গুণ তো
أحسن إلى من أساء إليك
তোমার সাথে যে মন্দ আচরণ করে তুমি তার সাথে ভালো আচরণ কর।’ সে তো কুরআনের  আয়াতশুনেছে
ولمن صبر وغفر إن ذلك لمن عزم الأمور.
প্রকৃতপক্ষে যে সবর অবলম্বন করে  ক্ষমা প্রদর্শন করেতো এটা বড় হিম্মতের কাজ। (সূরা শূরা : ৪৩)হাদীস শরীফে এসেছেআল্লাহ তিন ব্যক্তিকে পছন্দ করেনতাদের একজন  ব্যক্তিযার একজন মন্দপ্রতিবেশী রয়েছেসে তাকে কষ্ট দেয়। তখন  ব্যক্তি ছবর করে এবং আল্লাহর ছাওয়াবের আশা রাখে।একপর্যায়ে  প্রতিবেশীর ইন্তেকাল বা চলে যাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাকে মুক্তি দেন। (মুসনাদে আহমাদ,হাদীস ২১৩৪০আলমুসতাদরাকহাকেম  পৃ৮৯শুআবুল ঈমানবায়হাকীহাদীস ৯১০২)
দশগুণ বেশি গুনাহ
প্রতিবেশীর হক আদায় করা যেমন জরুরি প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া বা তার হক নষ্ট করা তেমনি মস্ত বড়গুনাহ। একই অন্যায় প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে করলে অন্যের তুলনায় দশ গুণ বেশি বা বড় বলে গণ্য হয়।
হযরত মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রাবলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সাহাবীগণকেযিনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বললোতাতো হারাম। আল্লাহ  তাঁর রাসূল তা হারাম ঘোষণাকরেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনকোনো ব্যক্তি দশজন নারীর সাথে যিনাকরলে যে গুনাহ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা তার চেয়েও বেশি  মারাত্মক গুনাহ। তারপর রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে চুরি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বললোতাতো হারাম।আল্লাহ  তাঁর রাসূল তা হারাম ঘোষণা করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,দশ বাড়িতে চুরি করা যত বড় অন্যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে চুরি করা এর চেয়েও বড় অন্যায়। (মুসনাদেআহমাদহাদীস ২৩৮৫৪আলআদাবুল মুফরাদ,হাদীস ১০৩শুআবুল ঈমান বায়হাকী
হাদীস ৯৫৫২)
জমির আইল ঠেলা
অনেক সময় এমন হয় যে দুই প্রতিবেশী তাদের বাড়ির সীমানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। যে প্রতিবেশীরশক্তি বেশি সে জোরপূর্বক নিজের সীমানা বাড়িয়ে নেয়। এটা বসতবাড়ির ক্ষেত্রে যেমন হয় ফসলের জমিরপ্রতিবেশীর সাথে আরো বেশি হয়। যাকে বলে ‘আইল ঠেলা সামান্য যমিন ঠেলে সে নিজের ঘাড়ে জাহান্নামটেনে আনল। যতটুকু যমিন সে জবরদস্তি বাড়িয়ে নিল  সে নিজেকে তার চেয়ে সাতগুণ বেশি জাহান্নামেরদিকে ঠেলে নিল। হাদীস শরীফে এসেছেযে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে এক বিঘত জমি দখল করলকিয়ামতের দিন জমির সাত তবক পরিমাণ তার গলায় বেড়ি আকারে পরিয়ে দেয়া হবে। (সহীহ মুসলিমহাদীস ১৬১১)
এক মন্দ প্রতিবেশীর ঘটনা
প্রতিবেশীর সাথে মানুষের সম্পর্ক সামান্য সময়ের নয়বরং সকাল-সন্ধ্যারাত-দিনমাস  বছরের বাসারা জীবনের।  প্রতিবেশী যদি মন্দ হয় তাহলে ভোগান্তির আর শেষ থাকে না। তেমনি এক মন্দপ্রতিবেশীর ঘটনা হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে।
হযরত আবু হুরাইরা রাথেকে বর্ণিতএক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসেতার প্রতিবেশীর ব্যাপারে অভিযোগ করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনতুমিছবর কর। এভাবে সে তিনবার আসার পর তৃতীয় বা চতুর্থ বারে নবীজী তাকে বললেনতোমার বাড়িরআসবাবপত্র রাস্তায় নিয়ে রাখ। সাহাবী তাই করলেন। মানুষ সেখান দিয়ে যচ্ছিল এবং  প্রতিবেশীকেঅভিশাপ দিচ্ছিল। তখন  প্রতিবেশী নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে বললআল্লাহররাসূলমানুষ আমাকে যা তা বলছে। নবীজী বললেনমানুষ তোমাকে কী বলছেসে বললমানুষ আমাকেলানত করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনতার আগেই আল্লাহ তোমাকে লানতকরেছেন। সে বললআল্লাহর রাসূলআমি আর এমনটি করব না (প্রতিবেশীকে কষ্ট দিব না।) তারপরঅভিযোগকারী নবীজীর দরবারে এলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেনতুমি (প্রতিবেশীরঅনিষ্ট থেকেনিরাপদ হয়েছ। (আলমুসতাদরাক,হাকেমহাদীস ৭৩০৩আলমুজামুল কাবীর,তবারানী,হাদীস ৩৫৬সহীহ ইবনে হিববানহাদীস ৫২০)
দুই নারীর দৃষ্টান্তকে জান্নাতী?
প্রতিবেশীর সাথে মন্দ আচরণ ব্যক্তির সব আমল বরবাদ করে দেয়। তাকে নিয়ে ফেলে জাহান্নামে। হযরতআবু হুরাইরা রাথেকে বর্ণিতএক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললএকনারীর ব্যাপারে প্রসিদ্ধসে বেশি বেশি (নফলনামায পড়েরোযা রাখেদুই হাতে দান করে। কিন্তু যবানেরদ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় (তার অবস্থা কী হবে?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,সে জাহান্নামে যাবে। আরেক নারী বেশি (নফলনামাযও পড়ে নাখুব বেশি রোযাও রাখে না আবার তেমনদান সদকাও করে নাসামান্য দু-এক টুকরা পনির দান করে। তবে সে যবানের দ্বারা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়না (এই নারীর ব্যাপারে কী বলেন?) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনসে জান্নাতী। (মুসনাদেআহমাদহাদীস ৯৬৭৫আলআদাবুল মুফরাদবুখারীহাদীস ১১৯)
প্রতিবেশীর দোষ ঢেকে রাখব
পাশাপাশি থাকার কারণে একে আপরের ভালো মন্দ কিছু জানাজানি হয়ই। গোপন করতে চাইলেও অনেককিছু গোপন করা যায় না। প্রতিবেশীর এসকল বিষয় পরস্পরের জন্য আমানত। নিজের দুনিয়া আখিরাতের কল্যাণেই একে অপরের দোষ ঢেকে রাখা জরুরি। আমি যদি তার দোষ প্রকাশ করে দিই তাহলেসেও আমার দোষ প্রকাশ করে দিবে। আর আমি যদি তার দোষ ঢেকে রাখি তাহলে সেও আমার দোষ গোপনরাখবে। এমনকি এর বদৌলতে আল্লাহও আমার এমন দোষ গোপন রাখবেনযা প্রতিবেশীও জানে না। হাদীসশরীফে এসেছেযে তার মুসলিম ভাইয়ের দোষ ঢেকে রাখে  আল্লাহও কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকেরাখবেন। (সহীহ মুসলিমহাদীস ২৫৮০)
মুসলিম  আত্মীয় হিসেবে প্রতিবেশীর হক
প্রতিবেশীর যত হক উপরে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো তো প্রতিবেশী মুসলিম হোক অমুসলিম হোক সবারইহক। আর প্রতিবেশী যদি মুসলিম হয় বা মুসলিম  আত্মীয় উভয়টিই হয় তাহলে এসকল হকের সাথে মুসলিম আত্মীয় হিসেবে যত হক আছে সবই তাদের প্রাপ্য।  বিষয়টিও স্মরণ রাখা জরুরি।
আল্লাহ আমাদের প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।